দেশে জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ নতুনভাবে রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলটি আবারও পুরোনো ফ্যাসিস্ট রূপে ফিরে আসতে চাইছে। ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল ও গোপন বৈঠক করছে দলটি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশাসনের কিছু গোপন সমর্থন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় দলটি পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—আওয়ামী লীগ এত দ্রুত সংগঠিত হচ্ছে কীভাবে? তাদের পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠা কি কোনো নির্বাচনি ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত?
রাজপথে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
গত এক সপ্তাহে ঢাকায় অন্তত চারটি ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) উত্তরা এলাকায় মিছিল করে তারা। এসব মিছিল সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ছদ্মনামে, পাঠানো হচ্ছে বিদেশি সমর্থকদের দিকেও।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বিশ্লেষকরা বলছেন, এত বড় হত্যাকাণ্ডের পরও যদি একটি দল আবার সংগঠিত হতে পারে, তবে সেটা প্রশাসনের ‘সবুজ সংকেত’ ছাড়া সম্ভব নয়। ধারণা করা হচ্ছে, প্রশাসনের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তারা দলটিকে কৌশলে সমর্থন দিচ্ছে।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে সতর্কতা
জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party)’র মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “যেদিন থেকে আমাদের আওয়ামীবিরোধী অবস্থানকে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ বলা শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই আওয়ামী লীগের মিছিল বড় হতে শুরু করেছে।” তিনি আরও বলেন, “অতি শিগগিরই আওয়ামী লীগ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসুন, না হলে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ শুরু করতে হবে।”
সরকারের জবাব ও পদক্ষেপ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, পুলিশের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কোনো অনুমতি ছাড়া আওয়ামী লীগের মিছিল ঠেকানো হয়। তিনি বলেন, “পুলিশ ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করেছে।”
বিশ্লেষকদের মত
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি না, তবে যারা অপরাধ করেছে, তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।”
এনডিএম (NDM)’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, “ফ্যাসিজম যেন বাংলাদেশে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, এজন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা জরুরি।”
বিশ্লেষকরা আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই পুনরায় সক্রিয় হওয়া এবং গোপন চক্রান্তের কারণে আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও জুলাই গণহত্যা বিচার রাজনৈতিক মামলায় আটকে যেতে পারে।