আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। হ্যান্ডকাফ পরানো নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাসানুল হক ইনু (Hasanul Haq Inu) ও শাজাহান খান (Shajahan Khan)। পুলিশ অভিযোগ করে, তারা হুমকি ও অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করেছেন।
হ্যান্ডকাফ পরানো নিয়ে ক্ষোভ
রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার সময় প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তারা বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হাতকড়া পরানো অমর্যাদার শামিল।
শাহজাহান খান বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমাকে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছে— এটা অমর্যাদাকর।” তার আইনজীবীও বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন।
পুলিশের অভিযোগ: হুমকি ও অপমান
আদালত সূত্র জানায়, পুলিশের সদস্য নুরুন্নবী বলেন, “সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিদের এভাবে আনা হয়।” আরেক সদস্য শহীদুল বলেন, “প্রিজনভ্যান থেকে নামার সময় আমাদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলা হয় এবং হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘তোদের দেখে নেবো’।”
অভিযোগে আরও বলা হয়, হাসানুল হক ইনু নাকি বলেছেন, “তোদের চৌদ্দ গোষ্ঠী খেয়ে ফেলব।” হাজতখানায় এসে নাকি মিটিং করে পুলিশকে আরও হুমকি দেওয়া হয়।
কাঠগড়ায় নেতাদের প্রতিক্রিয়া
কাঠগড়ায় থাকা হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন (Rashed Khan Menon), শাজাহান খান) ও কামরুল ইসলাম (Qamrul Islam) বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। তারা কোনো ধরনের হুমকি বা অবমাননাকর কথা বলেননি।
ট্রাইব্যুনালের সতর্কতা
আদালত বলেন, যদি কোনো আসামি উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে, তবে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। একই সঙ্গে পুলিশকে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশও দেন বিচারক।
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক নেতারা
জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টাসহ ১৯ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন জুনাইদ আহমেদ পলক (Zunaid Ahmed Palak), যিনি প্রিজনভ্যান থেকে অসন্তোষ জানিয়ে বলেন, “এই দেশ এভাবে চলতে পারে না, মানুষ শান্তি চায়, পরিবর্তন চায়।”
শাজাহান খান বলেন, “আমরা রাজাকারদের হাতকড়াও পরাইনি, আমাদের কেন পরানো হলো? এটা লজ্জাজনক।”