‘বিতর্কিত’ সাবেক রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী নিযুক্ত

সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান (Mohammad Sufiur Rahman) প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহায়তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এই নিয়োগকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।


পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সহকারী হিসেবে নিয়োগ

রোববার (২০ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুফিউর রহমান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা পাবেন। তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা এবং সুবিধা ভোগ করবেন।

আলোচিত রাষ্ট্রদূত

অবসরে যাওয়ার আগে সুফিউর রহমান ছিলেন জেনেভার জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। এছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়া (Australia) ও মিয়ানমারে (Myanmar) বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।


সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক

এই নিয়োগকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আব্দুল্লাহ লিখেছেন, “এই নিয়োগটা ঠিক কোন কোন মানদণ্ড বিবেচনায় দেওয়া হলো— তা পরিষ্কার হওয়া উচিত। সুফিউর রহমান জেনেভায় হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঢাকতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “এই সরকার নিজেরাই ‘ফ্যাসিস্ট দোসরদের’ পুনর্বাসনে নেমেছে?”


আল জাজিরার সাংবাদিকের পর্যবেক্ষণ

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের (Zulkarnain Saer) মন্তব্য করেছেন, “সুফিউর রহমান শেখ হাসিনার শাসনামলে ফ্যাসিজমের বিশ্বস্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন।” তিনি দাবি করেন, “সুফিউর এমনভাবে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতেন যাতে হাসিনা সরকারের নিপীড়ন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “রোহিঙ্গা (Rohingya) ইস্যুতে সুফিউর হাসিনাকে বোঝান— বাংলাদেশে আশ্রয় দিলে শান্তিতে নোবেল পেতে পারেন।”


বিতর্কিত অতীত ও প্রশ্নবিদ্ধ পদোন্নতি

নিয়োগের আগেই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনায় আসে যে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার সুফিউরের চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়। এখন তার নিয়োগকে ‘বিশেষ বিবেচনার পুরস্কার’ হিসেবেও ব্যাখ্যা করছেন বিশ্লেষকরা।