ছাত্রদলের বিরুদ্ধে আন্দোলন কলঙ্কিত করার অভিযোগ উত্থাপন করলেন উমামা ফাতেমা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (Anti-Discrimination Student Movement)ের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা (Umama Fatema) অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (Jatiyatabadi Chhatra Dal) পরিকল্পিতভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে।

‘সন্ত্রাস নয়, আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারক’

রোববার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উমামা ফাতেমা বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যার ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং আমরা ন্যায্য দাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।”

গত ১৯ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Primeasia University)র টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে উমামা বলেন, “আমরা দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

ছাত্রদলের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের অভিযোগ

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ছাত্রদল এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। এমনকি হত্যার মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করছে—যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, “সিসি টিভি ফুটেজ অনুযায়ী প্রথম আক্রমণকারীদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন আমাদের কয়েকজন সদস্য, তবে তারাও অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতোই উপস্থিত ছিলেন।”

কারা ছিলেন ঘটনাস্থলে?

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের ছাত্র হৃদয় মিয়াজি এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সোবহান নিয়াজ তুষার, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য—তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। একইসঙ্গে ছাত্রদল কর্মী তাওহিদ, ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ইমতিয়াজ জাহিদসহ আরও কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীও সেখানে ছিলেন।

তদন্ত ছাড়া দায় চাপানো অগ্রহণযোগ্য

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগেই ছাত্রদল ‘মিডিয়া ট্রায়াল’-এর মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটি নিন্দনীয় এবং গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী।

উমামা ফাতেমা বলেন, “আমরা দাবি জানাই—এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত অপরাধীদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কাউকে রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে দায়মুক্তি দেওয়া যাবে না, আবার নিরীহ কাউকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করাও চলবে না।”

‘শিক্ষাঙ্গনকে সহিংসতার আস্তানায় পরিণত করা হচ্ছে’

বিবৃতিতে বলা হয়, “ঘটনাটি প্রশ্ন তোলে—শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায়? কেন এমন হত্যাকাণ্ড বারবার ঘটছে? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে (Interim Government)।”

উমামা বলেন, “গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানাতে হবে।”

বিবৃতির শেষে, জাহিদুল ইসলাম পারভেজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং এ হত্যার বিচারে সকল পক্ষকে রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।