সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)র ভাগ্নি এবং যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক (Tulip Rizwana Siddiq) এক সময় বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশি নন—এই দাবি এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ সরকারি নথি বলছে, টিউলিপ একজন বৈধ বাংলাদেশি (Bangladeshi) নাগরিক। তাঁর নামে রয়েছে বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন)। তিনি নিয়মিত আয়কর রিটার্নও জমা দিয়েছেন।
সরকারি রেকর্ডে কী আছে?
টিউলিপ সিদ্দিকের এনআইডি নম্বর ইস্যু করা হয় ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি। এনআইডি অনুযায়ী, তার জন্ম ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, ঠিকানা: ধানমন্ডির সুধা সদন, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন হিসেবেও পরিচিত। ভোটার তালিকায় টিউলিপের নাম আছে ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর হালনাগাদে।
পাসপোর্টের তথ্যও বলছে—তিনি বাংলাদেশি
টিউলিপের প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু হয় ২০০১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, যেখানে জন্মস্থান হিসেবে লন্ডন এবং পেশা ‘শিক্ষার্থী’ উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে আগারগাঁও থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়। সেখানে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ হিসেবে উল্লেখ আছে তারেক আহমেদ সিদ্দিকের নাম, যিনি শেখ হাসিনার শাসনকালে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ছিলেন।
দুর্নীতির অভিযোগ ও গ্রেফতারি পরোয়ানা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। টিউলিপের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে মামলাও হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি আদালত টিউলিপ, শেখ হাসিনাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
যুক্তরাজ্যে চাপের মুখে পদত্যাগ
যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’ পদে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্ত শুরুর পর টিউলিপ পদত্যাগ করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ কখনো আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমার আইনজীবীর চিঠিরও কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।”
বিতর্কিত মন্তব্য: “আমি বাংলাদেশি নই”
২০১৭ সালে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে টিউলিপ বলেছিলেন, “আমি বাংলাদেশি নই, আমি একজন ব্রিটিশ এমপি।” কিন্তু বর্তমানে সব প্রমাণ তার এই বক্তব্যের বিপরীত চিত্র উপস্থাপন করছে।