ফ্যাসিস্ট সরকার আমলের সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাব (RAB) প্রধান বেনজীর আহমেদ (Benazir Ahmed)–এর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল (Interpol))। ১০ এপ্রিল রেড নোটিশ জারি হলেও বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর।
ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ও পলাতক অবস্থান
বাংলাদেশের পুলিশ সদর দপ্তর (Police Headquarters) জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে ঢাকার একটি আদালত রেড নোটিশ জারির নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (NCB) ইন্টারপোলে আবেদন করে। দুর্নীতির অভিযোগে এ রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বর্তমানে স্বপরিবারে পলাতক। পুলিশ এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি তিনি কোন দেশে অবস্থান করছেন। তবে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ কার্যকর হওয়ায় তাকে চিহ্নিত ও ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা বাড়ছে।
রেড নোটিশের তালিকায় আরও ১১ প্রভাবশালী
বেনজীর ছাড়াও রেড নোটিশের আবেদন পর্যালোচনায় রয়েছে আরও ১১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এদের মধ্যে রয়েছেন—
– সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)
– ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader)
– আ ক ম মোজাম্মেল হক (Mozammel Haque)
– হাছান মাহমুদ (Hasan Mahmud)
– আসাদুজ্জামান খান (Asaduzzaman Khan)
– জাহাঙ্গীর কবির নানক (Jahangir Kabir Nanak)
– মহিবুল হাসান চৌধুরী (Mohibul Hasan Chowdhury)
– শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh)
– তারিক আহমেদ সিদ্দিক (Tarique Ahmed Siddique)
– নসরুল হামিদ (Nasrul Hamid)
– মোহাম্মদ আলী আরাফাত (Mohammad Ali Arafat)
দুর্নীতি ও সম্পদ জালিয়াতির বিস্তৃত অভিযোগ
দুদক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বেনজীর আহমেদের নামে ও বেনামে রয়েছে—
– অন্তত ৩টি লাইটারেজ জাহাজ
– পঞ্চগড়ের বিশাল চা বাগান
– গাজীপুরে টেক্সটাইল মিল (Gazipur) ও রিসোর্ট
– বান্দরবানের থানচিতে রিসোর্ট
– ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সম্পদ
– সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের পাম জুমেরা ও মেরিনা এলাকায় একাধিক অ্যাপার্টমেন্ট
দুদক ইতোমধ্যে এসব সম্পদের খোঁজে আদালতে আবেদন করেছে। ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে আমেরিকা, কানাডা ও দুবাইয়ের আর্থিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
তাছাড়া বেনজীর ও তার পরিবারের নামে থাকা অন্তত ২৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলার প্রমাণ মিলেছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
দুদক নিশ্চিত করেছে, সব সম্পদের মালিকানা যাচাই করে প্রমাণিত হলে আদালতের মাধ্যমে সেসব সম্পদ ক্রোক করা হবে। একইসঙ্গে রেড নোটিশ কার্যকর হওয়ার ফলে, তাকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।