গৃহবধূদের ক্ষুদ্র সঞ্চয় ও নারীর আত্মনির্ভরশীলতায় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কিছু অতি উৎসাহী অংশ—এমন অভিযোগ উঠে এসেছে এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে। অদিতি করিম (Aditi Karim) কালের কণ্ঠে প্রকাশিত তার কলামে তুলে ধরেন, কিভাবে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) (Bangladesh Financial Intelligence Unit)–এর হয়রানিমূলক আচরণ সাধারণ নাগরিকের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে।
একটি বাস্তব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত
কলামে উল্লেখিত এক গৃহবধূ ১৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে ৩ হাজার টাকা করে সঞ্চয় করে গড়ে তোলেন স্থায়ী আমানত। নিজের আয়ের উৎস ছিল রান্না ও হাতের কাজ। হঠাৎ একদিন তার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে দেয় বিএফআইইউ, কারণ “একজন গৃহবধূর এত টাকা কিভাবে হলো”। এরপর তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন এবং হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার। কিন্তু ব্যাংক জানায়, তারা বিএফআইইউ থেকে অনুমতি না পেলে খুলতে পারবে না।
আদালতের আদেশও মানছে না প্রতিষ্ঠান
এই ঘটনাকে লেখক রাষ্ট্রীয় চরম আমলাতান্ত্রিক দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রশ্ন তোলেন—এটা কি সরকারের অর্ডার, নাকি কিছু অতি উৎসাহীদের বাড়াবাড়ি? তিনি স্পষ্ট করেন, এমন কিছু ঘটনা ‘জুলাই বিপ্লবের’ চেতনাকে খাটো করছে।
অতি উৎসাহীদের আগ্রাসী ভূমিকা
অদিতি করিম বলেন, আগের সরকারের সময় যেমন কিছু চাটুকার আমলা সরকারকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিল, তেমনিভাবে এখনো কিছু ‘নতুন চাটুকার’ নানা দিক থেকে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করছে। তারা এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)–এর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
নারীর ক্ষমতায়নে বাধা
কলামে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, ড. ইউনূসের অনুপ্রেরণায় যেসব গৃহবধূ আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করেছেন, তাদের এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও হয়রানি করা তাঁর কাজ ও অর্জনকে ক্ষুণ্ন করে। লেখক বলেন, “এ ধরনের তৎপরতা অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ”।
সমাধানের আহ্বান
অদিতি করিম লেখেন, এই অতি উৎসাহীদের থামাতে হবে। তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করছে, জনগণকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “সরকার যত দ্রুত এ চাটুকারদের থামাতে পারবে, ততই দেশের মঙ্গল।”