দাদাভাই পিনাকী ([DadaVai Pinaki]) তার ফেসবুক পোস্টে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেন, এই রিপোর্ট বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং এটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য করেছে।
বিলম্বিত রিপোর্ট ও প্রধান উপদেষ্টার উৎসাহ
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছিল ১৮ নভেম্বর ২০২৪, এবং তাদের রিপোর্ট দেওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। তবে তা জমা দিতে অতিরিক্ত দুই মাস সময় নিয়েছে কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ([Muhammad Yunus]) এই রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়ে তা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন এবং কিছু সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন।
দাদাভাই পিনাকীর ভাষ্য, “স্যার, একটু সামাল দেন। এই রিপোর্ট লেখায় যাদের দায়িত্ব ছিল, তারা কামের চাইতে আকামে পটু।”
ধর্মীয় অনুশাসন নিয়ে বিতর্ক
রিপোর্টে বলা হয় ধর্মীয় আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা সমাজে বৈষম্যের সৃষ্টি করছে। এ প্রসঙ্গে দাদাভাই লিখেছেন, “ধর্মীয় আইন মানা যে কোনো ধর্মের মানুষের জন্যই বাধ্যতামূলক এবং সেটা মানুষের আনন্দময় বিশ্বাসের জায়গা থেকে আসে। এর বিরুদ্ধাচরণ মানে ধর্ম থেকে দূরে থাকার চাপ প্রয়োগ।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিরীন আখতার ([Shirin Akhter]) মতো মুরুব্বি কমিশনে থাকলেও, সেটি অমোঘ সত্য নয়। জনগণের বাস্তবতা ও অনুভূতি বুঝতে না পারলে এমন রিপোর্ট সমাজে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
যৌনকর্মীদের শ্রমিক মর্যাদা নিয়ে আপত্তি
কমিশনের আরেক প্রস্তাব ছিল যৌনকর্মীদের শ্রমিকের স্বীকৃতি দেওয়া। এই বিষয়ে দাদাভাই পিনাকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পশ্চিমাদের মতো পতিতাবৃত্তিকে ইন্ডাস্ট্রি বানাতে চাইছে ওরা। এর পরিণাম ভয়াবহ হবে।”
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো যেমন সুইডেন, নরওয়ে, ফ্রান্স “নর্ডিক মডেল” অনুসরণ করে, যেখানে যৌনকর্মীদের নয় বরং গ্রাহকদের শাস্তির আওতায় আনা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সেই বাস্তবতা না জেনে উল্টো পথে হাঁটার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার ভাষায়, “আপনারা পতিতাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দিতে চান, পেনশন দিতে চান, ট্রেড ইউনিয়ন বানাতে চান—এটা কি সম্ভব?”
সম্মানজনক কর্মসংস্থানের দাবি
দাদাভাই বলেন, নারীদের কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না, কিন্তু তা যেন হয় দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। “বাংলাদেশের পুরুষেরা আধাপেটা খেয়ে মেনে নেবে, কিন্তু এইরকম অবমাননাকর পরিকল্পনা তারা মানবে না। আগুন জ্বালিয়ে দেবে।”
সতর্কবার্তা
সবশেষে, দাদাভাই পিনাকী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আগুন নিয়ে খেলা করবেন না। ধর্ম, সংস্কৃতি আর মানুষের বিশ্বাসকে অগ্রাহ্য করে কোনো সংস্কার জনগণ মেনে নেবে না।”