শাজাহান খানের রহস্যময় হাসি: রাজনৈতিক কৌশল, না কি স্নায়ুবিক সমস্যা?

সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান (Shajahan Khan) একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে হাস্যোজ্জ্বল প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন—যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। সেই আলোচিত ‘হাসি’ যেন তাকে ছাড়ছে না। গত কয়েক মাস ধরে জেলেও তার মুখে একই হাসি। আদালতে হাজিরার সময়, সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে—সব জায়গায় যেন একই রকম হাসির ছায়া। বিষয়টি এখন কেবল রাজনৈতিক আলোচনা নয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতেও প্রশ্নবিদ্ধ।

‘প্যাথোলজিক্যাল লাফটার’ কি?

চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় Pathological Laughter বা প্যাথোলজিক্যাল লাফটার—এটি কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত আচরণ নয়। এটি একটি নিউরোলজিক্যাল অবস্থা, যেখানে ব্যক্তি অপ্রাসঙ্গিক বা অনুচিত পরিস্থিতিতেও হঠাৎ অপ্রতিরোধ্যভাবে হাসতে শুরু করেন।
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায়ই নিজেও জানেন না তিনি কেন হাসছেন। হাসি থামানোও তার পক্ষে সম্ভব হয় না।

সম্ভাব্য কারণসমূহ:

  • স্নায়ুবিক রোগ
  • মস্তিষ্কে আঘাত বা স্ট্রোক
  • ফ্রন্টাল লোব বা সেরিবেলামে সমস্যা
  • মেন্টাল হেলথ সমস্যা, যেমন বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা স্কিজোফ্রেনিয়া

ভুল ব্যাখ্যার সম্ভাবনা

এই ধরনের হাসি অনেক সময় ‘উপহাস’, ‘অবজ্ঞা’ বা ‘অনুভূতিশূন্যতা’ হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়। অথচ এটি প্রকৃতপক্ষে চিকিৎসাযোগ্য একটি মানসিক বা স্নায়ুবিক অবস্থা হতে পারে।

রাজনৈতিক কৌশল না মেডিকেল কেস?

শাজাহান খান যদি শুধুই মিডিয়ার সামনে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী, অনমনীয় দেখাতে চেয়ে এই হাসিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে বিষয়টি একেবারে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। কিন্তু যদি এই হাসির ধারা সবসময় এবং সকল পরিবেশে দেখা যায়, তাহলে এটি নিছক আচরণিক প্রকাশ না হয়ে বরং চিকিৎসাগত মূল্যায়নের দাবি রাখে

চিকিৎসা ও সচেতনতা জরুরি

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন হাসির পেছনে যদি নিউরোলজিক্যাল কোনো কারণ থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। এছাড়া এই বিষয়ে সচেতনতা না থাকলে, ব্যক্তির সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বড় ধরনের ভুল ব্যাখ্যার মুখে পড়তে পারে।