বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বের হতে হতো না: কায়সার কামাল

বিএনপি (BNP)-র আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, “বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে খালেদা জিয়াকে চল্লিশ বছরের ভিটা থেকে এক কাপড়ে বের হতে হতো না।” তিনি বলেন, এই অন্যায় আচরণের ফলেই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।

বিচার বিভাগ নিয়ে ক্ষোভ

একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কায়সার কামাল বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অভাবের কারণে বিচার প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। “বিচারের নামে অবিচার হয়েছে,”— এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে হাজারো রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে জেলে রাখা হয়েছিল অন্যায়ভাবে।

তিনি বলেন, “আমরা সবসময় বলে আসছি, বিচার বিভাগ স্বাধীন হোক। বর্তমানে বিচার বিভাগের সংস্কারে আমরা বলেছি, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে সংস্কার হোক।”

নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে বক্তব্য

তিনি অভিযোগ করেন, “সংস্কার সংস্কার করতে করতে আট মাস চলে গেছে। মানুষ বাস্তব পরিবর্তন দেখছে না।”
বিএনপি চায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হোক। তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা অনুরোধ করেছি যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য।”

তবে রোডম্যাপের অগ্রগতি নিয়ে বিএনপি অসন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি।

জামায়াত ও এনসিপি প্রসঙ্গে

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক মানসিকতা থাকলে আমরা যে কোনো দলকে স্বাগত জানাই।”
এছাড়া জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সুসম্পর্ক রয়েছে। তারেক রহমান আগেই বলেছেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে দলই লড়াই করেছে, তাদের নিয়ে পরবর্তী সংসদ গঠিত হবে।”

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলা

তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার নামে এখন আর কোনো মামলা নেই। তারেক রহমানের প্রায় সব মামলা খারিজ হয়ে গেছে, মাত্র একটি মামলা আছে, যা ওয়ান ইলেভেন সময়ে হয়েছিল।”

সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা

আওয়ামী লীগের শাসনামলে দায়ের হওয়া ৬০ লাখ মামলার বিষয়ে বলেন, “মামলা প্রত্যাহারের গতি নেই বললেই চলে। রাজনৈতিক কর্মীরা এটাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না, তারা ফুঁসে উঠছে।”
বর্তমান সরকারের আট মাসের সফলতা সম্পর্কে বলেন, “মানুষই মূল্যায়ন করবে।”
তবে তিনি আশাবাদী যে ড. ইউনূস সময়মতো নির্বাচন দেবেন।

বিনিয়োগ পরিস্থিতি

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “বর্তমানে গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাব এবং জবাবদিহিতার সংকটে বিনিয়োগ আসছে না। বিএনপি চায়, জনগণ যেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।”