দেশের রাজনীতিতে এখন তিনটি ভিন্ন বলয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিএনপি (BNP), জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) ও এনসিপি (NCP)—তিনটি দলই আলাদাভাবে রাজনৈতিক বলয় তৈরি করছে।
নির্বাচন ঘিরে বৈঠক ও জোটের হিসাব
রাজনীতিতে মেরুকরণ দেখা গেলেও, এখনো নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। ঢাকা (Dhaka)র বনানীতে বিএনপির আহ্বানে আয়োজিত বৈঠকে সিপিবি (CPB) ও বাসদ (BSD) নেতারা অংশ নেন। বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ঐকমত্য গড়ে ওঠে।
বিএনপি এখনো জোট গঠনের ঘোষণা দেয়নি, তবে ছোট দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামী দলের মধ্যে ঐক্য প্রচেষ্টা চলছে। এনসিপিও বৈঠক করছে বিভিন্ন ইসলামী ও কওমি ঘরানার দলের সঙ্গে।
বিএনপির ছোট দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক
ছোট ছোট দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শুরু হয় বছরের শুরুতে, প্রথমে খেলাফত মজলিস (Khelafat Majlis) এর সঙ্গে। পরবর্তী সময়ে বৈঠক শ্লথ হলেও সম্প্রতি আবারও তৎপর হয়েছে বিএনপি।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (Iqbal Hasan Mahmud Tuku), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, জানান, এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক জোট গঠনের কথা ভাবছে না দলটি। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আদায়ে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তারা।
বিএনপির ঐক্য প্রক্রিয়ায় রয়েছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি (LDP), লেবার পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad)।
জামায়াতের নির্বাচনী জোট গঠনের উদ্যোগ
জামায়াতে ইসলামী ৫ আগস্টের পর থেকে কওমি মাদরাসাকেন্দ্রিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট গঠনে তৎপর। তাদের লক্ষ্য, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিশ্চিত করা।
মিয়া গোলাম পরওয়ার (Mia Golam Porwar), জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, জানান, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষিত হলে তাদের জোটের চূড়ান্ত রূপ স্পষ্ট হবে।
এনসিপির আলাদা অবস্থান
এনসিপি বর্তমানে কোনো জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে না বলে দাবি করছে। নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam), এনসিপির আহ্বায়ক, জানিয়েছেন, তাদের মূল এজেন্ডা হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন।
তবে এনসিপির সাম্প্রতিক বৈঠকগুলো, বিশেষ করে খেলাফত মজলিস ও হেফাজতে ইসলাম (Hefazat-e-Islam) এর নেতাদের সঙ্গে সংযোগ, তাদের রাজনৈতিক তৎপরতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
রাজনৈতিক বলয় এবং সম্ভাব্য জোটের ভবিষ্যৎ
বর্তমানে তিনটি বলয় স্পষ্ট হলেও নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে দলের স্বার্থ, এমপি হওয়ার নিশ্চয়তা এবং ব্যক্তিগত হিসাব-নিকাশের ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত কোন দল কোন জোটে থাকবে তা নির্ধারিত হবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা