৩০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে একটি সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকী (Farooki) ও দীপ্ত টিভি (Dipto TV)-র রিপোর্টার মিজানুর রহমান (Mizanur Rahman)-এর মধ্যে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ঘিরে সাংবাদিকতা নীতিমালা ও পেশাদার আচরণ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
ফারুকীর বক্তব্য ও সাংবাদিকের প্রশ্ন
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক মিজান ফারুকীকে প্রশ্ন করেন, “জুলাই আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ১৪০০ আপনি কীভাবে বলেন? এটা তো যারা রাজনীতিবিদ তারা বলবে।”
উত্তরে উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, “আমি জাতিসংঘের রিপোর্টের ভিত্তিতে বলেছি। আপনি রিসার্চ করুন। প্লিজ ডু ইওর ওউন রিসার্চ।”
সাংবাদিক তখন পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনি তো বললেন ১৪০০ মানুষ যিনি খুন করেছেন, আপনি কীভাবে বুঝলেন একজন মানুষ ১৪০০ মানুষকে খুন করেছে? এটা তো কোর্ট রায় দিবে। আপনি বায়াসড উত্তর দিলেন।”
প্রশ্ন না মতামত?—পেশাগত সীমা নিয়ে বিতর্ক
এই কথোপকথন সামনে আসার পর বিশ্লেষক ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে: মিজানুর রহমান কি প্রকৃত অর্থে প্রশ্ন করেছেন, না কি নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন?
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মন্তব্য যেমন “এটা তো যারা রাজনীতিবিদ তারা বলবে” বা “আপনি বায়াসড উত্তর দিলেন”—এগুলো সংবাদ সম্মেলনে একজন রিপোর্টারের পক্ষ থেকে মতামত বলেই বিবেচিত হয়। সাংবাদিকদের নিরপেক্ষতা বজায় রেখে তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন করা পেশাগত শিষ্টাচারের অংশ। মতামত প্রদর্শনের এই ধরণ হোয়াইট হাউসের মত গুরুত্বপূর্ণ ব্রিফিংয়েও অগ্রহণযোগ্য এবং কোনো সিরিয়াস মিডিয়া হাউজে এমন আচরণের জন্য রিপোর্টারকে অন্তত সতর্ক করা হতো।
একটি উদাহরণ হিসেবে সঠিক প্রশ্ন উপস্থাপন করে বলা হয়:
“অমুক বিশেষজ্ঞ বা বুদ্ধিজীবী বা রাজনীতিক বা আইনজীবী বলেছেন: ‘জুলাই আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ১৪০০, এটা বলা আপনার ঠিক হয় নাই, এটা তো যারা রাজনীতিবিদ তারা বলবে।’ এখন আপনি উপদেষ্টা হিসেবে এটার প্রত্যুত্তরে কি বলবেন?”
এই ধরনের কাঠামোগত প্রশ্নে ব্যক্তিগত মতামত না দিয়ে বরং সংশ্লিষ্ট মতামতের প্রেক্ষিতে উত্তর আহ্বান করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মতামত জানানোর অধিকার নেই রিপোর্টারের—এটাই সংবাদ শিষ্টাচারের মৌল নীতি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার অধিকার রয়েছে, কিন্তু মতামত উপস্থাপনের অধিকার নেই, বিশেষত প্রেস ব্রিফিংয়ের মতো পেশাদার ফোরামে।