শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পতনের আট মাসের মাথায় দেশে আত্মপ্রকাশ করেছে ২২টি নতুন রাজনৈতিক দল ও ৪টি সংগঠন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব দল নির্বাচনকে সামনে রেখে তৈরি হলেও, অধিকাংশই আদর্শ ও জনসম্পৃক্ততার ঘাটতিতে আলোচনা থেকে বাইরে রয়েছে।
নতুন দল তৈরির পুরোনো সংস্কৃতি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে নতুন দল গঠনের প্রবণতা পুরোনো বিষয়। এই দলগুলোর মধ্যে অনেক সময় থাকে না সুস্পষ্ট আদর্শ বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, বরং লক্ষ্য থাকে নির্বাচনী দরকষাকষিতে মধ্যস্থতামূলক সুবিধা আদায় করা।
বিশ্লেষকদের মতে, “দল গঠনের উৎসাহ থাকলেও, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অগ্রগতিতে তারা তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে না।”
রাজধানীতেও অপরিচিত অধিকাংশ নতুন দল
যদিও দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি বিরল নয়, তথাপি এবার ব্যতিক্রম যে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাধারণ মানুষ এসব নতুন দলের নামও জানে না। কেউ কেউ শুনলেও মনে রাখতে পারেনি। ফলে জনমনে এই দলগুলোর ওপর প্রত্যাশাও গড়ে ওঠেনি।
প্রশ্ন আদর্শ ও অর্থায়ন নিয়ে
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এসব নাম সর্বস্ব দলের পেছনে কী আদর্শ বা অর্থায়ন কাঠামো কাজ করছে, তা নিয়ে রয়েছে জোর প্রশ্ন। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে এই দলগুলোর উপস্থিতি আরও বিতর্ক তৈরি করছে।
‘স্বাধীন মত প্রকাশের বহিঃপ্রকাশ’—রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মত
অন্যদিকে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম (Advocate Hasnat Kaiyum) নতুন দল গঠনের বিষয়টিকে দেখছেন একটি দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের পর স্বাধীন রাজনৈতিক মতপ্রকাশের প্রকাশ হিসেবে। তার মতে, গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিকভাবে মানুষ এখন আরও সক্রিয়।
তবে সচেতন নাগরিকদের মত, এসব দল নির্বাচনের পরে “ভোজবাজির মতো হারিয়ে যেতে পারে” যদি না তারা জনগণের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ তৈরি করতে পারে।