বিএনপি (BNP)’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) জাতীয় নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি।
শুক্রবার (২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাব (National Press Club)-এ আমার বাংলাদেশ পার্টি (AB Party)’র ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই বক্তব্য দেন।
“জনগণের ভোটেই গড়ে উঠুক সরকার”
তারেক রহমান বলেন, “জনগণের ভোটের মাধ্যমে জবাবদিহিতামূলক সংসদ ও সরকার গঠিত হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত থাকবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এই উদ্যোগ নিতে হবে, যেন রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আদালতের মুখোমুখি হতে পারে।”
“তাঁবেদারি রুখতে হবে, ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদ করতে হবে”
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে আর কেউ যেন বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার দুঃসাহস না দেখায়, সেটিই হোক দেশের আগামী দিনের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর যেসব নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করছে, তাদেরকে স্বাগত জানাই।”
সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
তারেক রহমান প্রশ্ন তোলেন, “পলাতক স্বৈরাচার কীভাবে তিনবার সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধ সরকার গঠন করল?” তিনি আরও বলেন, “ব্লেইমগেম দিয়ে দায়িত্ব এড়ানো যাবে না। অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”
“পুনর্বাসন নয়, বিচার চাই”
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “লুটপাট ও দুর্নীতির শত কোটি টাকা হাতে নিয়ে তারা পুনর্বাসনের সুযোগ খুঁজছে। স্থানীয় নির্বাচন যেন তাদের পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম না হয়।”
সংস্কারে সময়ক্ষেপণ নিয়ে প্রশ্ন
তিনি বলেন, “দেশের সব রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে, তবু কেন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে এত সময় নিচ্ছে?” তারেক রহমান বলেন, “সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবি অবজ্ঞা করতে প্রলুব্ধ করলে, সেই সংস্কারের আর কোনো মানে থাকে না।”
“নির্বাচনের দাবি কোনো অপরাধ নয়”
নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানোকে অপরাধ হিসেবে চিত্রিত করার প্রচেষ্টার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এটি গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য অপমানজনক এবং পলাতক স্বৈরাচারদের জন্য প্রাপ্তি। এ ধরনের অবজ্ঞা রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।”
উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য বিরোধী নেতারা
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (Revolutionary Workers Party)’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক (Saiful Haque), গণসংহতি আন্দোলন (Gonosonghoti Andolon)’র প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি (Zonayed Saki), গণ অধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad)’র সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur), জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens Party)’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam) এবং খেলাফত মজলিস (Khelafat Majlish)’র আমির মামুনুল হক (Mamunul Haque)।