গণ অধিকার পরিষদ (Gono Odhikar Parishad)–এর সভাপতি ও ডাকসুর (DUCSU) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি নিজেদের এককভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের উচিত আওয়ামী লীগ (Awami League) থেকে শিক্ষা নেওয়া। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ কাউকে পরোয়া করে না, এবং ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান মেনে নেবে না।
সমাবেশে বক্তব্য
শুক্রবার (২ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ (Narayanganj) জেলার ফতুল্লা (Fatullah) থানার পঞ্চবটী (Panchabati) এলাকায় অনুষ্ঠিত যুব অধিকার পরিষদের এক যুব সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নুর বলেন, “যে যত বড়, তার দায়িত্ব তত বেশি। জাতীয় ঐক্যকে ধরে রাখা বড় দলগুলোর দায়িত্ব। যদি কেউ ভাবেন আমরা একাই একশো—তবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস দেখুন।” তিনি জানান, মানুষের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিয়ে কেউ জনপ্রতিনিধি হতে পারবে না।
গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রস্তুতি
নুর জানান, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই। গণ অধিকার পরিষদ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানান। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে চেয়ারম্যান ও মেয়র পদেও অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শামীম ওসমান প্রসঙ্গে বক্তব্য
তিনি বলেন, “শামীম ওসমান (Shamim Osman)দের আমলে নারায়ণগঞ্জ ত্রাসের রাজত্বে পরিণত হয়েছিল। ক্ষমতা পালাবদলের সময় তারা পালিয়ে যায় এবং নতুন শামীম ওসমানরা আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এমন অবস্থা যেন আর না হয়, সেজন্য সকলকে সোচ্চার হতে হবে।”
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ
নুরুল হক নুর বলেন, অতীতে যে গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে, তাতে প্রায় দুই হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং ত্রিশ হাজারের বেশি মানুষ পঙ্গু হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নৃশংস ভূমিকা পালন করেছে, অথচ দলটির নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, “শহীদদের রক্ত এখনও শুকায়নি, অথচ আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে যাচ্ছে। গত ১৬ বছরে বিভিন্ন দল আন্দোলন সংগ্রাম করলেও জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না, কারণ নেতাদের ওপর তাদের বিশ্বাস ছিল না। যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ—এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি
নুর জানান, জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে যে পরিবর্তন এসেছে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের পাড়া-মহল্লা পর্যন্ত সংগঠন বিস্তৃত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জসহ দেশের কোথাও যেন আর চাঁদাবাজি বা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার চলতে না পারে। এই প্রশ্নের জবাব রাজনীতিকদের দিতে হবে।”