জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে নিজেকে বিএনপি (BNP) কর্মী দাবি করা মো. নূর মোহাম্মদ (রনি) এখন ‘মামলা ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছেন। আন্দোলনের সময় আহত হওয়ার পর তিনি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে (Dhaka Metropolitan Magistrate Court) একটি মামলা করেন, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এবং ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব হাসান খসরু চৌধুরীসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।
তবে অভিযোগ উঠেছে, মামলার ভয় দেখিয়ে তিনি ও তার সহযোগীরা মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করছেন। উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া মাহবুব বলেন, আন্দোলনের সময় তিনি কানাডা (Canada) অবস্থান করছিলেন, তারপরও তাকে মামলায় আসামি করা হয়। ২৭ মার্চ ‘রাজিব’ নামের এক ব্যক্তি তার বাসায় গিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করেন এবং মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রাজিব মাহবুবের প্রশ্নের জবাবে মো. নূর মোহাম্মদ রনিকে ফোনে যুক্ত করেন, যিনি কখনও নিজেকে মামলার বাদী বলেন, আবার কখনও বলেন, তিনি কাউকে মামলায় দেননি, বরং রাজিবের কথায় নাম যুক্ত হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়, মামলার নামে একটি চাঁদাবাজির চক্র কাজ করছে।
মাহবুব বলেন, তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হয়েও এভাবে প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় অনেক সচেতন নাগরিক এ ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি বলে অভিহিত করেছেন। এর আগেও একাধিকবার তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয় এবং মসজিদ থেকে ফেরার পথে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন।
চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে রাজিব প্রথমে ফোন রিসিভ করলেও কোনো তথ্য দিতে অস্বীকার করেন এবং পরে বলেন, তিনি বাইরে আছেন। অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি (Dhaka North Metropolitan BNP) নেতারা জানিয়েছেন, রাজিব নামে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী নেই এবং কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করলে দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
উত্তরা পশ্চিম থানা (Uttara West Police Station) ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মহিদুল ইসলাম (DC Md. Mohidul Islam) জানান, চাঁদাবাজি নিয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।