আপিল বিভাগে দাখিল: তুরিন আফরোজের পিএইচডি ডিগ্রি ভুয়া বলে জানাল অস্ট্রেলীয় বিশ্ববিদ্যালয়

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (International Crimes Tribunal) এর সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ (Turin Afroz) এর ডক্টরেট ডিগ্রি ভুয়া বলে জানিয়েছে সিডনির ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (University of New South Wales)। তিনি পিএইচডি সম্পন্ন করেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই তথ্য গতকাল রোববার (৪ মে) একটি বাড়ি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগে (Appellate Division) দাখিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হায়দার।

ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ

১৩ মার্চ আপিল বিভাগে ওই মামলার শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক অভিযোগ করেন, তুরিন আফরোজ তার প্রসিকিউটর থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তিনি আদালতের কাছে অনুরোধ করেন, যাতে তুরিন আফরোজের মা শামসুন্নাহার বেগম (Shamsunnahar Begum) কে উত্তরার বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ শুনানি হয়।

আদালতের আদেশ ও বাড়ির মালিকানা বিতর্ক

২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. সেলিমের একক হাইকোর্ট (High Court) বেঞ্চ শামসুন্নাহার বেগম ও তাঁর ছেলে শাহনেওয়াজ আহমেদ (Shahnewaz Ahmed) এর পক্ষে রায় দেন এবং বাড়িতে তাদের বসবাসের ওপর আর কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানান।

এ মামলার শুনানিতে তুরিন আফরোজের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাইফুল করিম, অপরদিকে শাহনেওয়াজের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বিএম ইলিয়াস কচি, ব্যারিস্টার মনজুর রাব্বী ও ব্যারিস্টার আতিকুল হক।

আদালতে ব্যারিস্টার আতিকুল হক জানান, উত্তরার রেসিডেনসিয়াল মডেল টাউন (Residential Model Town) এলাকার ১৫ নম্বর প্লটের পাঁচতলা বাড়িতে ২০০২ সাল থেকে শামসুন্নাহার বেগম ও শাহনেওয়াজ বসবাস করছিলেন। ২০১৭ সালে তুরিন আফরোজ তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ।

এরপর উভয় পক্ষ ঢাকার (Dhaka) যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দুটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। আদালত ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর উভয় পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে বাড়ির ভোগদখলে স্থিতাবস্থা জারি করেন।

মালিকানা দাবি ও হেবা সংক্রান্ত বিতর্ক

তুরিন আফরোজ আদালতে দাবি করেন, তার মা শামসুন্নাহার ১৯৯১ সালে ওই সম্পত্তি ক্রয় করেন এবং ১৯৯৪ সালে তার স্বামী তসলিম উদ্দিন হেবা দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তি তুরিনকে দান করেন। অপরদিকে, শামসুন্নাহার ও শাহনেওয়াজ দাবি করেন, তসলিম উদ্দিন কোনো হেবা দেননি বরং ১৯৯৭ সালে শামসুন্নাহার নিজেই ছেলেকে হেবা করেন। পরে ১৯৯৯ সালে জমির নামজারি করে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়।

বর্তমানে আদালতে দুটি দেওয়ানী মামলা চলমান রয়েছে এবং স্বাভাবিক নিয়মে বিচারিক আদালতে মামলা চলবে বলে জানান আইনজীবী আতিকুল হক।