কুরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা সোয়া কোটি
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশে কুরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার (Farida Akhter)। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এবার প্রায় ২০ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৫টি গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোববার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। এ সময় কুরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কুরবানির পশুর অবাধ পরিবহণ নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরা হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ জুন দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।
পশুর প্রকারভেদ ও সংখ্যা
এ বছর কুরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়া এবং ৫ হাজার ৫১২টি অন্যান্য প্রজাতির গবাদিপশু রয়েছে।
ফরিদা আখতার জানান, চাহিদা বেড়ে গেলেও তা মেটাতে সক্ষমতা রয়েছে। পশুর বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং খামারিদের সঠিক মূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমদানির প্রয়োজন নেই। দেশেই উৎপাদিত পশু দিয়ে চাহিদা পূরণ সম্ভব। পাশাপাশি, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার।”
স্টেরয়েড রোধ ও সচেতনতা কার্যক্রম
উপদেষ্টা জানান, সারাদেশে খামারিদের স্টেরয়েড ও হরমোনমুক্ত হৃষ্টপুষ্টকরণে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। এখন পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৬৫৬ জন খামারিকে প্রশিক্ষণ, ৬ হাজার ৬০০টি উঠান বৈঠক এবং ২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭৮টি লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ করা হয়েছে।
স্টেরয়েড ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে ৫৩ হাজার ২৬৩টি খামার পরিদর্শন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
পরিবহণ ও প্রাণিকল্যাণ আইন
ফরিদা আখতার জানান, বাসের লকআপে ছাগল-ভেড়া পরিবহণ না করার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে। ‘প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯’ অনুযায়ী গবাদিপশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা পরিহার করতে হবে, তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৯ হাটে ২০ ভেটেরিনারি মেডিকেল দল
এ বছর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-এর আওতায় ১৯টি হাটে ২০টি ভেটেরিনারি মেডিকেল দল গঠন করা হবে। প্রতিটি হাটে নির্ধারিত স্থানে মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে এবং কর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হবে।
মনিটরিংয়ের জন্য গঠন করা হবে ৫টি কেন্দ্রীয় মনিটরিং দল এবং দুটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল দল। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত মনিটরিং দলগুলো স্থানীয় ভেটেরিনারি মেডিকেল দলের কার্যক্রম তদারকি করবে।
কসাই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি
স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পশু কুরবানি নিশ্চিত করতে ১৫ হাজার ৩৬৯ জন পেশাদার এবং ২১ হাজার ২০৮ জন অপেশাদার কসাইকে চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।