দীর্ঘ ১৭ বছর পর স্বদেশে ফিরে এসেছেন জুবাইদা রহমান (Zubaida Rahman)। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সঙ্গে ছিলেন তার পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও নাতনি জাইমা রহমান। প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরে জুবাইদা রহমান তাঁর বাবার ধানমন্ডির বাসভবনে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ইতোমধ্যে বাড়িটিকে সুসজ্জিত ও নিরাপত্তা-সুনিশ্চিত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাফরুল থানায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান এবং তার মা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে। মামলায় ঢাকার একটি আদালত জুবাইদাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-এর পর দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আদালত তার সাজা স্থগিত করে।
কেন বরখাস্ত করা হয়েছিল?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা ডা. জুবাইদা রহমান ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার-এ প্রথম হয়ে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসসি সম্পন্ন করেন।
২০০৮ সালে তিনি শিক্ষাছুটি নিয়ে স্বামী তারেক রহমানের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদেও ছুটি শেষে কর্মস্থলে না ফেরায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে বরখাস্ত করে।
পারিবারিক প্রেক্ষাপট
জুবাইদা রহমান সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান-এর শাসনামলে নৌবাহিনীর প্রধান ও পরে এরশাদ সরকারের সময় যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী-র কন্যা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানী তার চাচা।
তার সঙ্গে তারেক রহমানের বিয়ে হয় ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও প্রত্যাবর্তন
গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়া লন্ডন যান। সেখানে লন্ডন ক্লিনিক-এ ১৭ দিন অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। দেশে ফেরার পর তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা ও আশপাশে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও মোতায়েন রয়েছেন।