জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বেঁচে আছেন আল্লাহর রহমতে: শিশির মনির

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত (Jamaat) নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম (ATM Azharul Islam)–এর পক্ষে আপিল শুনানিতে তার আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির (Mohammad Shishir Monir) বলেছেন, “মহান আল্লাহ তায়ালা আজহারকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। সময় তাকে বাঁচিয়েছে।” বৃহস্পতিবার (৮ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে (Appellate Division) এ শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।

“বিচারের নামে অবিচার করা হয়েছে”

শিশির মনির বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ছিল ‘সাজানো ও পূর্বপরিকল্পিত’। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) ফ্যাসিস্ট সরকারের আরও সময় পেলে আজহারুল ইসলামের ফাঁসি কার্যকর করে ফেলত। তিনি বলেন, “এটি সুবিচারের সুযোগ—আদালতের সামনে আমরা এসেছি বলেই আজ এই সত্য বলা সম্ভব হচ্ছে।”

গুম ও নির্যাতনের উদাহরণ তুলে ধরা হয়

শুনানিতে তুলে ধরা হয়, কীভাবে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার হয়েছে, এবং কীভাবে আমান আযমী, ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী (Hummam Quader Chowdhury)কে গুম করে ‘আয়নাঘরে’ রাখা হয়েছিল।

শিশির মনিরের আবেগঘন উপস্থাপনায় এজলাসে এক পর্যায়ে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করে।

শুনানির পেছনের প্রক্রিয়া ও আদালতের আদেশ

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ (Dr. Syed Refaat Ahmed) এর নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শিশির মনিরকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রায়হান উদ্দিন ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন।

রায়ের পটভূমি ও আপিল প্রক্রিয়া

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। এরপর ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় বহাল রাখে। পরে আসামিপক্ষ রিভিউ আবেদন করে।

২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে শুনানি ও তারিখ ধার্য হয়। এটি ছিল প্রথম কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা, যেখানে রিভিউ থেকে মূল আপিল শুনানির অনুমতি দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।