ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ (BSF)–এর মাধ্যমে খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম (Kurigram) সীমান্ত দিয়ে ১০২ জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman)। বৃহস্পতিবার (৮ মে) তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে এই প্রতিক্রিয়া জানান।
“গায়ের জোরে আগ্রাসন, আমরা মাথা নত করব না”
শফিকুর রহমান লিখেছেন, “গায়ের জোরে, অন্যায়ভাবে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’-এর নামে যে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়—মহান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করব না।”
তিনি সরকারকে আহ্বান জানান, “এই বিষয়ে যেন কোনো দুর্বলতা না দেখায় এবং আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ‘না’ বলে।”
সরকারের প্রতিক্রিয়া
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান (Khalilur Rahman) বলেন, “আমরা প্রতিটি কেস আলাদাভাবে নিরীক্ষণ করছি। প্রমাণিত হলে আমাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে, তবে সেটা ফরমাল চ্যানেলে হতে হবে। এভাবে পুশ ইন সঠিক নয়।”
তিনি আরও জানান, ভারত সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন
জানা যায়, বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, রামগড় ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ ৮১ জনকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে। এর মধ্যে মাটিরাঙ্গার গোমতী শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, আচালং এলাকা দিয়ে ২৩ জন এবং পানছড়ির লোগাং সীমান্ত দিয়ে ৩০ জনকে পুশ ইন করা হয়। তাদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ সবাই ভারতের গুজরাটের মুসলিম নাগরিক বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
তাদের দাবি, গুজরাট থেকে বিমানযোগে ত্রিপুরায় নিয়ে এসে বাংলাদেশের সীমান্তে এনে জোরপূর্বক পুশ ইন করা হয়েছে। একই সময় কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্ত দিয়ে আরও ৩৬ জন রোহিঙ্গা (Rohingya)কে পুশ ইন করার তথ্য পাওয়া গেছে।
“আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হোন”
জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের পোস্টে আহ্বান জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ যেন ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।