পঞ্চগড়ে মানসিক রোগীর ঢল: বিএসএফ-এর পুশইন নীতির অভিযোগ স্থানীয়দের

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় (Panchagarh) জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে নাম-ঠিকানাহীন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে তেঁতুলিয়া উপজেলা (Tetulia Upazila) এবং এর আশপাশের হাট-বাজারগুলোতে এইসব ব্যক্তিদের অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ (BSF) কৌশলে এসব মানসিক রোগীকে বাংলাদেশে পুশইন করছে।

ভাষা ও চেহারায় অচেনা, সন্দেহ ভারতীয় নাগরিক

স্থানীয়রা জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন এসব মানুষদের কারও নাম বা পরিচয় নেই। তারা কেউ হিন্দি, কেউ ইংরেজিতে কথা বলে, আবার কেউ দুর্বোধ্য ভাষায় কিছু বলার চেষ্টা করে। পরনে ময়লা, ছেঁড়া ও দুর্গন্ধযুক্ত পোশাক। তারা চলাফেরা করছে হাটবাজার, রাস্তাঘাট এবং দোকানপাটের সামনে। অনেকের চুল জটধরা এবং শরীরে ময়লার স্তর স্পষ্ট।

সীমান্ত এলাকা ও বাংলাবান্ধা বন্দরে বেশি উপস্থিতি

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর (Banglabandha Land Port) এলাকায় এই মানসিক রোগীদের বিচরণ বেশি দেখা যাচ্ছে। হীপাড়া বাজার, তীরনইহাট, শালবাহান হাট, তেঁতুলিয়া শহরের রাস্তাঘাটে তাদের দেখা যাচ্ছে ঘুরে বেড়াতে। অনেক সময় কয়েকদিন থেকে আবার হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়, এরপর নতুন কেউ আসে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) (Bangladesh Poribesh Andolon – BAPA) পঞ্চগড় জেলা (Panchagarh District) শাখার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের (Anowarul Islam Khair) বলেন, “ভাষা, আচরণ ও চেহারা দেখে বোঝা যায়—তারা ভারতীয়। কিন্তু যেই দেশেরই হোক, তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠানো হলে তা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক।” তিনি বলেন, এসব মানসিক রোগীর মাধ্যমে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার বাস্তব শঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়দের উদ্বেগ ও সহানুভূতি

স্থানীয় দোকানদার ও বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এসব মানসিক রোগীদের খাবারও স্থানীয়রাই দিচ্ছেন। কেউ কেউ দোকানের বারান্দায় বা রাস্তায় রাত কাটাচ্ছে। ট্রাভেল ট্যুরিজম ব্যবসায়ী মামুন হোসেন বলেন, “এসব মানুষ পরিচয়হীন, ভারতীয় বলেই মনে হয়। বিষয়টি মানবিক হলেও একই সঙ্গে ভয়ংকর, কারণ এদের মাধ্যমে নানা ধরনের রোগ ছড়াতে পারে।”

সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি

স্থানীয়দের মতে, বিএসএফ পরিকল্পিতভাবে এসব মানসিক রোগীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে, যাকে পুশইন নীতি বলা হচ্ছে। এই অমানবিক ও ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণতার বিরুদ্ধে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন স্থানীয় সমাজকর্মী ও পরিবেশবাদীরা।