আওয়ামী লীগের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জনকল্যাণে ব্যবহারের আহ্বান নুরের

গত ১৬ বছরে অবৈধভাবে জনগণের সম্পদ লুটপাটের অভিযোগ তুলে গণঅধিকার পরিষদ (Gono Odhikar Parishad) সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) বলেছেন, সেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত। রোববার (১১ মে) দুপুরে পুরানা পল্টনে (Paltan) দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি

সংবাদ সম্মেলনে নুর আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী ও সীমান্তপারের ষড়যন্ত্রকারী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে দেশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে।” তিনি অভিযোগ করেন, পতিত সরকারের সময় বিরোধী দলগুলোর ৩০ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার হলেও, ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের মাত্র ৩২ জন নেতাকর্মীও গ্রেফতার হয়নি।

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

নুর বলেন, “আওয়ামী লীগ এখন আর শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং সীমান্তের ওপার থেকেও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী শক্তি হিসেবে কাজ করছে।” গত নয় মাসে দলটি প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সরকারের সঙ্গে তরুণদের সংলাপের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত

তিনি জানান, শাহবাগ (Shahbagh), প্রেস ক্লাব (Press Club) ও পল্টন এলাকায় ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আন্দোলন করেছে। “আমরাও যমুনা (Jamuna) ঘেরাও কর্মসূচি দিতে চেয়েছিলাম, তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টা তরুণদের কথা শুনে আগামীর বাংলাদেশে একটি গতিপথ তৈরি করতে চান—এই বিশ্বাস থেকেই আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি,” বলেন নুর।

সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ‘আপসকামী চরিত্র’ রয়েছে: নুর

নুর সরকারের অভ্যন্তরে ‘আপসকামী’ উপদেষ্টা থাকার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য বিদেশি দূতাবাসে গোপন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। এরপরই করিডর দেওয়ার ঘোষণা ও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দেখা যায়।” তিনি দাবি করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ (Abdul Hamid) দেশ ত্যাগ করেছেন ওই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

নুর বলেন, “রাষ্ট্রপতি পালিয়ে যাওয়ার দায় কেবল কিশোরগঞ্জ (Kishoreganj) জেলার এসপির নয়; এর পেছনে ইমিগ্রেশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও জড়িত থাকতে পারেন।” অথচ দায় চাপানো হয়েছে শুধু জেলা পুলিশের ওপর।

সরকারকে হুঁশিয়ারি ও জনসম্পৃক্ত দাবি মানার আহ্বান

সরকারকে উদ্দেশ্য করে নুর বলেন, “এই সরকার আমাদের রক্ত, ঘাম ও জেল-জুলুমের বিনিময়ে গঠিত হয়েছে। তাই এই সরকারের বিরুদ্ধেই যদি আবার দাবি আদায়ে ঘেরাও কর্মসূচি দিতে হয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, যেকোনো জনসম্পৃক্ত দাবি প্রধান উপদেষ্টা (Chief Adviser) গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান (Muhammad Rashed Khan), সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন (Hasan Al Mamun) এবং কেন্দ্রীয় নেতারা।