বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) (BIDA) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) (BEZA)–র নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (Chowdhury Ashiq Mahmud Bin Harun) ব্যাপক প্রচারণামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তবে তার উদ্যোগকে ঘিরে তৈরি হওয়া ‘আশিক ম্যাজিক’-এর বাস্তব প্রতিফলন বিনিয়োগের পরিসংখ্যানে এখনো দেখা যাচ্ছে না।
প্রচারণা-নির্ভর কর্মসূচি, কিন্তু বিনিয়োগে ভাটা
সামিট, স্টারলিংক, নাসার সঙ্গে চুক্তিসহ একাধিক উচ্চাভিলাষী উদ্যোগের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন আশিক মাহমুদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার উপস্থাপনা প্রশংসিত হলেও বাস্তব বিনিয়োগ প্রবাহে তার প্রভাব স্পষ্ট নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই–মার্চ) মধ্যে নিট বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ছিল ৮৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ১১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার, অর্থাৎ এফডিআই প্রবাহ কমেছে ২৬ শতাংশ।
মূলধনি যন্ত্র আমদানিতেও পতন
‘উইকলি সিলেকটেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটরস’ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্র আমদানির জন্য ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছে ১৫২ কোটি ডলারের বেশি, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৯ শতাংশ কম।
হিটম্যাপ পরিকল্পনা, কিন্তু আগ্রহ নেই বিনিয়োগকারীদের
২০২৪ সালের নভেম্বরে বিডা একটি হিটম্যাপ তৈরির পরিকল্পনা নেয় বিনিয়োগকারী দেশ চিহ্নিত করতে। আশিক মাহমুদ এ উদ্যোগকে ভবিষ্যৎ কৌশলের রূপরেখা বললেও এর বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়নি।
স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা ও কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে, বিদেশিরা এখনো রাজনীতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া ১৫ শতাংশ ঋণের সুদহার, জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয় এবং প্রশাসনিক জটিলতা বিনিয়োগে বাধা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, “আশিক ম্যাজিক” যতই আলোচনায় থাকুক না কেন, বিনিয়োগের স্থিতি এবং প্রবাহ বাড়াতে কার্যকর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং স্বচ্ছ নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা এখন সবচেয়ে জরুরি।