আ.লীগ আমলের বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের বর্তমান অবস্থান: কারা গ্রেপ্তার, কারা পলাতক

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের পতনের পর পাল্টে যায় দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপট। তৎকালীন সময়ের দম্ভোক্তি প্রদর্শনকারী পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকেই পলাতক, কেউ কেউ গ্রেপ্তার, আবার কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পালিয়ে যাওয়া ও গ্রেপ্তার হওয়া কর্মকর্তারা

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ (Benazir Ahmed) গণঅভ্যুত্থানের আগে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

পরে গ্রেপ্তার হন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক (Shahidul Haque), আব্দুল্লাহ আল মামুন (Abdullah Al Mamun) এবং সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া (Asaduzzaman Mia)। তারা বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

পলাতক ও লাপাত্তা কর্মকর্তারা

সদ্য সাবেক মনিরুল ইসলাম (Monirul Islam), বিপ্লব কুমার সরকার (Biplob Kumar Sarkar), মেহেদি হাসান (Mehedi Hasan), প্রলয় কুমার জোয়ারদার (Proloy Kumar Joardar), নুরুন্নবী চৌধুরী, সঞ্জীব চক্রবর্তী, জাহাঙ্গীর হোসেন মাতব্বর, মোল্লা নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, মাসুদ আলম সহ বহু কর্মকর্তা পুলিশ থেকে অনুপস্থিত। এদের অনেকেই ভারতে, মালয়েশিয়ায় অথবা দুবাইয়ে পলাতক বলে জানা গেছে।

বনজ কুমার মজুমদার (Banaj Kumar Majumder) এবং কৃষ্ণ পদ রায় (Krishna Pada Roy)-এর অবস্থান নিয়েও গোপনীয়তা রয়ে গেছে। ধারণা করা হয়, তারাও ভারতে পালিয়ে গেছেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও বিচারাধীন মামলায় জড়িতরা

মশিউর রহমান (Moshiur Rahman) এবং আশুলিয়ার আব্দুল্লাহেল কাফি (Abdullahil Kafi) এর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তারি দেখানো হয়েছে। নাজমুল ইসলাম সুমন (Nazmul Islam Suman) এর নামেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

দম্ভোক্তির প্রতীক ছিলেন ‘ডিবি হারুন’

হারুন অর রশিদ (Harun Or Rashid), যিনি ‘ডিবি হারুন’ নামে কুখ্যাত ছিলেন, বিরোধী নেতাকর্মী, সাংবাদিক এমনকি শিক্ষক পেটানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। সানজিদা কাণ্ড ও একাধিক সহিংস ঘটনায় আলোচনায় আসেন।

তার সঙ্গে ঢাকায় তৎকালীন আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন রাজীব হাসান, জুয়েল রানা, ফরমান, মাজহারুল, আবুল হাসানসহ অনেকে।

আন্দোলন-পরবর্তী পরিস্থিতি ও পুলিশের ভাবমূর্তি

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ তালেবুর রহমান (Mohammad Talebur Rahman) বলেন, “৫ আগস্টের পর পুলিশের কাঠামোতে বড় পরিবর্তন এসেছে। তবে মনোবলের ঘাটতি কাটিয়ে উঠছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পলাতকদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুলিশ বর্তমানে নিজ ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে সচেষ্ট এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতেই নতুনভাবে কাজ করছে বলে তিনি জানান।