গত সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশে এক ভয়াবহ অর্থপাচার ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত ও শ্বেতপত্র কমিটির রিপোর্ট। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান (Salman F Rahman)–কে ‘দরবেশ বাবা’ আখ্যা দিয়ে তার নেতৃত্বে “৪০ চোরের মন্ত্রিপরিষদ” দ্বারা পরিচালিত হয় লুটেরাতন্ত্র।
দুদক সূত্র অনুযায়ী, এ ৪০ জন শীর্ষ দুর্নীতিবাজ মিলে প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। অর্থপাচারের গন্তব্য ছিল দুবাই, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক ও আরও করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত ১৭টি দেশ।
সালমান এফ রহমান: ছায়া প্রধানমন্ত্রী ও শেয়ার কেলেঙ্কারির হোতা
সালমান একাই প্রায় এক লাখ কোটি টাকা লুট করেছেন। শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, ব্যাংক লোন আত্মসাৎ ও বৈদেশিক অর্থপাচারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাকে বলা হচ্ছে “লুটতন্ত্রের ছায়া প্রধানমন্ত্রী”।
শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
- শেখ রেহানা (Sheikh Rehana): দেশে ১০৬ কোটি, বিদেশে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা পাচার।
- সজীব ওয়াজেদ জয় (Sajeeb Wazed Joy): বিদেশে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা পাচার।
- সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (Saima Wazed Putul): ১৮ হাজার কোটি টাকা পাচার, দেশে ১১৭ কোটি টাকা জব্দ।
- রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি (Redwan Mujib Siddiq Bobby): ২৭ হাজার কোটি টাকা পাচার এবং সিআরআই (CRI)-এর বিরুদ্ধে ৯০০ কোটি টাকার অনিয়ম।
আওয়ামী নেতৃবৃন্দ ও মন্ত্রিপরিষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
- ওবায়দুল কাদের: ৫০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার।
- আসাদুজ্জামান খান কামাল: ১৮ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, দেশে ৭০০ কোটি।
- আ হ ম মুস্তফা কামাল: ৩৭ হাজার কোটি টাকা পাচার।
- জাহিদ মালেক: ১৩ হাজার কোটি টাকা পাচার।
- নসরুল হামিদ বিপু: ৫৭ হাজার কোটি টাকা পাচার।
- জুনাইদ আহমেদ পলক: ৭ হাজার কোটি টাকা।
- সাইফুজ্জামান চৌধুরী: ২২ হাজার কোটি টাকা।
বিতর্কিত আমলারা ও তাঁদের সম্পদের হিসাব
- আবুল কালাম আজাদ, আহমদ কায়কাউস, কবির বিন আনোয়ার, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুল মালেক, আব্দুর রউফ তালুকদার, ফজলে কবির, মহিবুল হক, বেনজীর আহমেদ, হারুন উর রশিদ, কামাল নাসের চৌধুরী, তাকসিম আহমেদ খানসহ অনেকেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।
পঞ্চপাণ্ডব ব্যবসায়ী ও অর্থপাচারের কাঠামো
রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন কিছু ব্যবসায়ী, যাদের মধ্যে অন্যতম:
– আজিজ খান
– নজরুল ইসলাম মজুমদার
– নাফিজ সরাফত
– সালমান এফ রহমান (প্রধান কারিগর)
জাতীয় শ্বেতপত্র কমিটি ও দুদকের অনুসন্ধান
দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) এবং জাতীয় শ্বেতপত্র কমিটি গত ১৫ বছরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ৪০ জন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজের তালিকা প্রকাশ করেছে।