জুলাই বিপ্লবের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো প্রকাশ হয়নি বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। এর পেছনে চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)–এর আইনজীবী ড. তুহিন মালিক (Dr. Tuhin Malik)। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সুবিধাভোগীরাই এর প্রধান বাধা।
ঘোষণাপত্র আটকে থাকার প্রেক্ষাপট
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার কাছে অন্যতম গণদাবি ছিল ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ। সরকার গত ১০ মে ঘোষণা দিয়েছিল, আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এর আগেও বহুবার সময় নির্ধারণ করা হলেও তা প্রকাশ হয়নি।
তুহিন মালিকের চাঞ্চল্যকর দাবি
তুহিন মালিক লিখেছেন, “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র হচ্ছে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তনের বন্দোবস্ত। সেজন্যই রাজনৈতিক দল, সিভিল-মিলিটারি আমলাতন্ত্র ও সুবিধাভোগী সিভিল সোসাইটি কেউ চায় না এটি প্রকাশিত হোক।”
তিনি আরও বলেন, “অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সুবিধাভোগীরা সবাই চাচ্ছেন জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না হোক।”
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গ
তুহিন মালিক দাবি করেন, ঘোষণাপত্রের খসড়ায় ১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন বা বাতিলের অভিপ্রায় প্রকাশ করা হয়েছে। আর এটাই মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংবিধানকে কেন্দ্র করে বর্তমান রাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়, এতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলে বিদ্যমান গোষ্ঠীগুলোর বিরোধিতার মুখে পড়ছে ঘোষণাপত্র।
প্রশ্নগুলো সামনে এনেছেন তুহিন
তিনি ফেসবুক পোস্টে একের পর এক প্রশ্ন তুলে বলেন, “৫ আগস্টের পর সরকার গঠনের পরও কেন ঘোষণা জারী হলো না? কেন ৩১ ডিসেম্বর ছাত্ররা শহীদ মিনার থেকে প্রকাশ করতে চাইলে বাধা দেওয়া হলো? কেন ১৫ জানুয়ারির সময়সীমা দিয়েও প্রকাশ করা হলো না?”
তিনি আরও যোগ করেন, “১০ মে ঘোষণার পর থেকেই চারপাশ অশান্ত হয়ে উঠেছে। এটিই প্রমাণ করে যে, কাঠামোগত পরিবর্তনের বিপক্ষে একশ্রেণির মানুষ এখনো সক্রিয়।”