অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের (Interim Government) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) বামপন্থীদের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের ভিয়েতনাম (Vietnam) সফরের আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি এক টেলিভিশন আলোচনায় তিনি বলেন, “বামরা এখনো কোকুনে বাস করছে, তারা বিশ্ব বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ।”
ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার উদাহরণ টেনে সমালোচনা
বামপন্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনার সময় শফিকুল বলেন, “ভিয়েতনামে ৪৪টি পোর্ট আছে, অনেকগুলো পরিচালনা করছে বিদেশি প্রাইভেট কোম্পানি। মালয়েশিয়াতেও একই চিত্র। অথচ আমাদের দেশে বামরা এসব ইস্যু নিয়ে চিৎকার করছে। এটা প্রমাণ করে তারা সময় থেকে পিছিয়ে আছে।”
তিনি বলেন, “আমরা আলোচনা করছি এপি মোলার মায়ার্স্ক-এর মতো কোম্পানির সঙ্গে, যারা বিশ্বের অন্যতম বড় টার্মিনাল অপারেটর। তারা ৭০-৮০টা পোর্ট পরিচালনা করছে। চট্টগ্রাম পোর্ট সংস্কার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক হৃদস্পন্দনের অংশ।”
পোর্ট, করিডর ও সংস্কারের যুক্তি
নিউমোরিং টার্মিনাল (New Mooring Terminal) বা লালদিয়ার টার্মিনাল বিদেশিদের অপারেট করতে দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে শফিকুল বলেন, “চট্টগ্রাম পোর্ট না বাড়ালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের এক্সপোর্ট ১০০ বিলিয়নে নেয়া যাবে না। মংলা ও বেনাপোল পোর্ট এই সক্ষমতা রাখে না। তাই আমাদের আন্তর্জাতিক মানের লজিস্টিক্যাল দক্ষতা প্রয়োজন।”
উপস্থাপক জানতে চান, এই সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর মত ছাড়াই নেওয়া ঠিক কি না। জবাবে প্রেস সচিব বলেন, “সংস্কার আমাদের মূল ম্যান্ডেট। আমরা রেভলিউশনের ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছি। সবকিছুর জন্য মতৈক্যের প্রয়োজন নেই।”
আদমজি ও কর্মসংস্থানের উদাহরণ
সরকারের কর্মসংস্থান তৈরির উদ্যোগ তুলে ধরতে শফিকুল বলেন, “যেমন আদমজি জুট মিল বন্ধ করে সেখানে ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। আগে যেখানে ২৫ হাজার লোক বসে বসে বেতন পেত, এখন সেখানে ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এসব দেখে বামদের বোঝা উচিত উন্নয়নের বাস্তবতা।”
রোহিঙ্গা সংকটও সংস্কারের অংশ
রোহিঙ্গা সংকট (Rohingya Crisis) নিয়েও শফিকুল বলেন, “এই সংকট এতদিন ‘নো ওয়ানস বেবি’ ছিল। আমাদের হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজ করেছেন, জাতিসংঘে প্রফেসর ইউনূস বক্তব্য দিয়েছেন। এর ফলে সেপ্টেম্বর মাসে ১৭০টি দেশের অংশগ্রহণে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।”
নির্বাচনের আগেই সংস্কারের লক্ষ্য
উপস্থাপক প্রশ্ন তোলেন, সব কিছু অন্তর্বর্তী সরকার করলে নির্বাচনের প্রয়োজন কী? জবাবে শফিকুল বলেন, “এটা ফালতু আলোচনা। আমরা শুধু নির্বাচন আয়োজন করবো না, বরং সংস্কার শেষ করে রাজনৈতিক সরকারকে হস্তান্তর করবো। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বর থেকে জুনের যেকোনো সময়।”