পাবনা (Pabna) জেলার আটঘরিয়া (Atgharia) উপজেলায় জামায়াত-বিএনপি সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে আলোচিত বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব (Habibur Rahman Habib)। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আটঘরিয়ায় জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে বা ইমাম নামাজ পড়াতে পারবেন না।
সংঘর্ষ পরবর্তী বিতর্কিত বক্তব্য
শনিবার বিকেলে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে জামায়াত-বিএনপি সংঘর্ষে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে গিয়ে হাবিব এ বক্তব্য দেন। তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
তিনি বলেন, “দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা সবাইকে মানতেই হবে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বলছি—আটঘরিয়ার কোনো মসজিদে জামায়াতের মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবে না, জামায়াতের কোনো ইমাম ইমামতি করতে পারবে না। শুক্রবার দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে তালা লাগিয়ে নামাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে—এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
জামায়াতের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ
হাবিব জামায়াতকে স্বাধীনতা বিরোধী ‘রগকাটা গ্রুপ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, “তারা মিথ্যা বলে, তাদের পেছনে নামাজ হয় না। এরা পাকিস্তানের দোসর।” তিনি আটঘরিয়াবাসীকে জামায়াতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের অফিসে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি দাবি করেন, “যদি কেউ প্রমাণ দেখাতে পারে যে আমাদের কেউ কোরআন পুড়িয়েছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে দায় নেবো।” পাশাপাশি অভিযোগ করেন, জামায়াত বিএনপির শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে, এর ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।
জামায়াতের কড়া প্রতিবাদ
অপরদিকে, আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা নকীবুল্লাহ (Maulana Nakibullah) হাবিবুর রহমান হাবিবের বক্তব্যকে ‘ন্যাক্কারজনক’ এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “একজন দায়িত্বশীল নেতা হয়ে তিনি আজান ও নামাজ নিয়ে এমন বক্তব্য দিয়েছেন, যা জনগণ ভালোভাবে নেয়নি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আটঘরিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস দখলসহ ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে বিএনপি। ঈশ্বরদী থেকে সন্ত্রাসী এনে নামাজরত অবস্থায় গুলি চালানো হয়েছে, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট এবং কোরআন পোড়ানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এছাড়া অভিযোগ করেন, দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে তালা লাগিয়ে ইমামকে হুমকি দিয়ে নামাজ বন্ধ করা হয়েছে।
দেবোত্তর কলেজ নির্বাচন ঘিরেই উত্তেজনা
দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের নির্বাচনে জামায়াত নেতারা ফরম তুলতে গেলে তাদের বাধা দেন বিএনপি নেতারা এবং মারধর করে বের করে দেন। এ ঘটনার পর পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, অফিস ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটে। একে অপরকে দোষারোপ করেছে উভয় পক্ষ।