ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) এক সময় ছিলেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। অনেকেই তাকে প্রেসিডেন্ট জিয়া (Ziaur Rahman)-এর পর সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন পাওয়া ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ের কিছু সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম তাকে সেই অবস্থান থেকে দূরে সরিয়ে ফেলেছে বলে মত দিয়েছেন কলামিস্ট ও খতিব যুবায়ের আহমাদ।
ইউনূসের ‘নারী সংস্কার কমিশন’ ও বিতর্ক
প্রধান বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু নারী সংস্কার কমিশন (Women Reform Commission) গঠন। এই কমিশনে এমন কিছু এনজিওকর্মী নারীদের স্থান দেওয়া হয়েছে যারা দীর্ঘদিন ধরে কথিত নারীবাদ প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। এসব নারী অতীতে ক্ষমতাসীন যেকোনো সরকারের কাছেই নিজেদের দাবি নিয়ে সক্রিয় ছিলেন। এখন উপদেষ্টা হয়ে তারা সেই দাবি বাস্তবায়নের সুযোগ পাচ্ছেন—এটি জনগণের দৃষ্টিতে উদ্বেগজনক বলে মনে করেন লেখক।
লেখকের মতে, এই কমিশনে দেশের নারীদের প্রতিনিধিত্বশীল কোনো নারী নেই, বরং পশ্চিমা ধ্যানধারণা অনুযায়ী একটি নীতিগত রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এমন চিন্তাধারা দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে আঘাত করছে।
পশ্চিমা এজেন্ডা ও আন্তর্জাতিক চাপ
লেখকের দাবি, ড. ইউনূস এইসব উদ্যোগ নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে। তবে এতে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মহল যেসব দাবির পেছনে আছে, সেগুলোর অনেকগুলোই ধর্ম, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধবিরোধী বলে মনে করছেন অনেকে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে দেশের ভেতরে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা বাড়বে, আর আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও গোষ্ঠীগুলো শুধুমাত্র ৫০ জন ‘নারীবাদী’র দাবি প্রচার করে গোটা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবে।
গণমানুষের সঙ্গে দূরত্ব ড. ইউনূসের জন্য বিপদজনক
লেখক যুবায়ের আহমাদের মতে, ড. ইউনূস এখন উভয় সংকটে—একদিকে পশ্চিমাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চাপে, অন্যদিকে দেশের জনগণের অসন্তোষ। তিনি যদি জনসম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ না দেন এবং বিতর্কিত বিষয়গুলো থেকে সরে না আসেন, তাহলে ইতিহাসে তার নাম ভালোবাসার নয়, বরং ঘৃণার প্রতীকে পরিণত হবে।
লেখকের আহ্বান: বিদায় হোন জনগণের ভালোবাসা নিয়ে
লেখক পরামর্শ দেন, ড. ইউনূসের উচিত অহেতুক আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে গণমানুষের আবেগ ও মূল্যবোধের বিপরীতে যাওয়া নয়। বরং প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো নীরবে সম্পন্ন করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেওয়া উচিত।