গোলাম মাওলা রনি (Golam Maula Rony) তাঁর সর্বশেষ রাজনৈতিক প্রবন্ধে ব্যর্থ শাসন, দুর্নীতিগ্রস্ত অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশ যেন প্রকৃতির হাতে পরিচালিত হচ্ছে—‘দেশ চালায় আল্লায়, মধু খায় উল্লায়।’
চাণক্যের অর্থশাস্ত্র থেকে সমকালীন বিশৃঙ্খলা
প্রবন্ধের শুরুতে তিনি তুলে ধরেন প্রাচীন ভারতের রাষ্ট্রচিন্তাবিদ চাণক্য (Chanakya) ও তাঁর অর্থশাস্ত্রের দৃষ্টিভঙ্গি—যেখানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল চাবিকাঠি ছিল জনগণের আর্থিক নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা ব্যবস্থার দক্ষতা। এরপর তিনি তাৎপর্যপূর্ণভাবে বর্তমান বাংলাদেশে সেই নীতি ও আদর্শের সম্পূর্ণ বিপরীত বাস্তবতার চিত্র আঁকেন।
চাঁদাবাজির নির্মম বাস্তবতা
নারায়ণগঞ্জের এক চাঁদাবাজের ভয়ঙ্কর অডিও টেপ এবং ব্যবসায়ীদের ওপর একের পর এক হামলার বিবরণ দিয়ে রনি বলেন, চাঁদাবাজদের দাপট ও ভয়ঙ্করতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তারা নিজেদের কৃতকর্মের গর্ব প্রকাশ করতেও দ্বিধা করছে না।
তরুণ ব্যবসায়ীর পালিয়ে বাঁচার করুণ গল্প
রনি বর্ণনা করেন, কীভাবে একজন তরুণ ব্যবসায়ী, যার বাবা ছিলেন একাধিকবার নির্বাচিত আওয়ামী লীগ (Awami League) সংসদ সদস্য, চাঁদাবাজদের চাপ, ব্যাংক-জটিলতা এবং ভয়ভীতির মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ব্যাংককে আশ্রয় নেন।
চাঁদাবাজদের হাতে ভয়াবহ অবস্থার শিকার হয়ে তিনি এক রাতে সব টাকা তুলে দিয়ে আত্মরক্ষা করেন এবং পরদিনই দেশ ত্যাগ করেন। এরপর ব্যাংক তাঁর নামে চেক ডিজওনার মামলার প্রস্তুতি নেয়।
আইন-শৃঙ্খলা ও অর্থনীতির ভয়াবহ বিপর্যয়
এইসব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রনি বলেন, রাষ্ট্রের বর্তমান চিত্র এমন যে, গোয়েন্দা, প্রশাসন ও শাসকগণ জনদুর্ভোগ সম্পর্কে অন্ধ ও বধির। দেশ যেন স্বয়ং আল্লাহর ভরসায় চলছে। তিনি লেখেন, “১৮ কোটি মানুষের রিজিক নিয়ে চাঁদাবাজ ও দুর্বৃত্তরা পিঁপড়া-উল্লার মতো ছিনিমিনি খেলছে।”
শাসকদের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন
প্রবন্ধের শেষাংশে তিনি বলেন, আল্লাহর খলিফারূপে শাসকদের যে দায়িত্ব ও কর্তব্য, তা এ দেশে আর মানা হচ্ছে না। রাষ্ট্র যেন দুর্বৃত্ত, মাফিয়া এবং ক্ষমতালোভী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
এই দীর্ঘ ও তীব্র লেখা বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগের বহিঃপ্রকাশ।