বিএনপি (BNP) নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain) বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে বাধা দেওয়া হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে এবং এর পেছনের মুখোশ উন্মোচন করাই ছিল তার আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য। আজ সোমবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি
আজ সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation) ভবনের সামনে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন ইশরাকের সমর্থকরা। তারা দাবি করেন, দ্রুত শপথ না নেওয়া হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে। পাশাপাশি, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud)-এর পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
গত চারদিন ধরে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে চলা এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের একমাত্র দাবি, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় অনুসারে ইশরাক হোসেনের দ্রুত শপথ গ্রহণ নিশ্চিত করা।
ফেসবুক পোস্টে ইশরাকের প্রতিক্রিয়া
ফেসবুক পোস্টে ইশরাক বলেন, “মেয়র ফেওর কিছু না। অন্তর্বর্তী সরকারের কতিপয় ব্যক্তির ক্ষমতার লোভ ও এটি চিরস্থায়ী করার কুৎসিত সত্যটা বের করে আনাটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।”
তিনি আরো বলেন, “অনেক সমালোচনা সহ্য করেছি। পিতা-মাতাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ গালাগালও শুনেছি, কিন্তু চুপ থেকেছি। কারণ গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য এদের চেহারা উন্মোচন করতেই হবে।”
ইশরাক অভিযোগ করেন, “ঢাকায় বিএনপির মেয়র আটকে রাখার মধ্য দিয়ে এই প্রশাসন জাতীয় নির্বাচনে কী ভূমিকা রাখতে চায় তা এখন স্পষ্ট। নিরপেক্ষতা বিসর্জন দিয়ে একটি দলের পক্ষ নিয়ে কাজ করছে কিছু লোক। তারা হাসিনার মতো বিচারকদের হুমকি দিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে।”
তিনি বলেন, “একদিন এই কুচক্রীদের নাম ও পরিচয় সামনে আসবে। হাসিনাকেও আমি বলেছিলাম, কবর ঠিক করা আছে, আল্লাহর হুকুম হলে সেখানেই হবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে একচুলও ছাড় দেওয়া হবে না।”
পেছনের প্রেক্ষাপট
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (Awami League) প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh) ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। কিন্তু গেল ২৭ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে মেয়র ঘোষণা করে। তা সত্ত্বেও এখনো তার শপথ অনুষ্ঠান হয়নি, যা নিয়ে ইশরাক ও তার সমর্থকদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।