ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation)-এ বিএনপি (BNP) নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)-কে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করানোর দাবিতে টানা পাঁচদিন ধরে আন্দোলন করছে তাঁর সমর্থকরা। এরই মধ্যে সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud) জানিয়েছেন, ইশরাকের মেয়র পদে শপথ গ্রহণে অন্তত ১০টি আইনি ও প্রশাসনিক বাধা রয়েছে।
আসিফ মাহমুদের উল্লেখ করা ১০টি বাধা:
**১. হাইকোর্টের রায় লঙ্ঘন
হাইকোর্টে আর্জি সংশোধন অবৈধ ঘোষিত হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনের ট্রাইব্যুনাল তা অগ্রাহ্য করে রায় দিয়েছে।
২. একপাক্ষিক রায়:
নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশ নেয়নি, ফলে একতরফা রায় হয়েছে। পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।
৩. গেজেট প্রকাশে তড়িঘড়ি:
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ও নাগরিকদের লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
৪. স্থানীয় সরকার বিভাগকে পক্ষ করা হয়নি:
রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের কোনও নির্দেশনা নেই এবং বিভাগটি মামলার পক্ষভুক্তও ছিল না।
৫. বিচারাধীন রিট পিটিশন:
শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশনকে বিবাদী করে দায়ের করা রিট এখনো বিচারাধীন।
৬. দ্বিমুখী ট্রাইব্যুনাল রায়:
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের অনুরূপ মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে আর্জি সংশোধন খারিজ করা হয়। অথচ ইশরাকের মামলায় ভিন্ন অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
৭. মেয়াদ নিয়ে অস্পষ্টতা:
ইশরাকের মেয়র হিসেবে মেয়াদ কতদিন থাকবে বা আদৌ মেয়াদ আছে কিনা, তা পরিষ্কার নয়।
৮. নির্বাচন কমিশনের সতর্কতা:
কমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, “কোনো আইনগত জটিলতা না থাকলে” ব্যবস্থা নিতে। বর্তমানে একাধিক জটিলতা রয়েছে।
৯. আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনির্ধারিত:
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত এখনো পাওয়া যায়নি।
১০. রাজনৈতিক বৈধতা:
আওয়ামী আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে বিএনপি বারবার প্রশ্ন তুলেছে। এখন সেসব নির্বাচনের ফলাফলে মেনে নেওয়া হলে তা রাজনৈতিক দ্বিচারিতা হবে।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও ব্যক্তিগত মন্তব্য
আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, “এই সমস্ত জটিলতা নিরসনের আগে শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়। কিন্তু বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন অবরোধ করে নগর সেবা ব্যাহত করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ইশরাকের আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক বক্তব্যের কোনও যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এটিকে সাধারণ জনগণের আন্দোলন বলার সুযোগ নেই, কারণ গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এটি মূলত দলীয় কর্মসূচি।”
প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত
নগর ভবনের অবরোধে সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে জনভোগান্তি বাড়ছে। আসিফ মাহমুদের মতে, আইনগত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন সম্ভব নয়।