ভাইরাল ভিডিওতে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া মতিউরের পরিবারের অভিযোগ: পরিকল্পিত হামলা

বগুড়ার (Bogra) আদমদীঘি (Adamdighi) উপজেলায় এক চলন্ত ট্রেন থেকে বাইরে ঝুলিয়ে ফেলে দেওয়া হয় মতিউর রহমান (Motiur Rahman) নামে ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে। ঘটনাটি ঘটার পর মুহূর্তেই ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ট্রেন থেকে পড়ে গেলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

ভাইরাল হওয়া মতিউরের বাড়ি নওগাঁর (Naogaon) রাণীনগর (Raninagar) উপজেলার পারইল গ্রামে। অনেকে তাকে চোর এবং ছিনতাইকারী দাবি করলেও তার পরিবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এবং ঘটনার নেপথ্যে পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ তুলেছে।

ট্রেনেই হামলার শিকার

ঘটনাটি ঘটে রবিবার (১৮ মে) দুপুরে, বগুড়া থেকে সান্তাহারগামী একটি কমিউটার ট্রেনে নসরতপুর স্টেশন (Nasratpur Station) এলাকায়। অভিযোগ অনুযায়ী, মতিউর রহমানকে সজীব হোসেনের ছোট ভাই রাকিব ও শ্যালকরা মিলে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

মতিউরের ছেলে আহসান হাবিব জানান, “বাবা সৌদি আরবে লোক পাঠানোর কাজ করতেন এবং ১৫ দিন আগে তালশন গ্রামের সজীব হোসেনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে। কাগজপত্রে দেরি হওয়ায় সজীবের পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন আগে ঝামেলা হয়। সেই রেশ ধরে ট্রেনে একা পেয়ে বাবার ওপর হামলা চালানো হয়।”

বেঁচে গেলেও নিস্তার মেলেনি

মতিউরের ছেলে আরও জানান, ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার পর প্ল্যাটফর্মে থাকা জনতা তাকে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী বলে বেধড়ক মারধর করে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি জানাতে গেলে সান্তাহার রেলওয়ে থানা (Santahar Railway Police Station) বলেছে, “তিনি জীবিত আছেন, মারা গেলে মামলা নেওয়া যেত।”

সাক্ষ্য ও প্রতিবাদ

কুসুম্বী গ্রামের বাসিন্দা হাসান এবং পারইল গ্রামের আবুল কালাম আজাদ জানান, মতিউরের মাধ্যমে তারা বা তাদের আত্মীয়রা বিদেশে গেছেন এবং কখনো কোনো অভিযোগ ছিল না। তারা মতিউরের ওপর হামলাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও পরিকল্পিত বলে দাবি করেন।

অন্যদিকে অভিযুক্ত রাকিব হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সজীবের বাবা হেলাল জানান, “ছেলের কোনো কাজ হয়নি, তাই মতিউরের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছি। ট্রেনে কী হয়েছে তা বলতে পারবো না, তবে রাকিব কিছু করেনি।”

পুলিশের মন্তব্য

আদমদীঘি থানার (Adamdighi Police Station) ওসি এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি রেলওয়ে থানা এলাকার মধ্যে হওয়ায় আমরা কোনো অভিযোগ নিইনি।”

সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাবিব (Habibur Rahman Habib) জানান, “ভুক্তভোগীরা থানায় এসে সেন্ট্রির সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। আমি তখন ছিলাম না। এখনো অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভিডিও দেখে আমরা ঘটনাটি জেনেছি।”