পটুয়াখালী (Patuakhali) জেলার বাউফল (Baufal) উপজেলায় দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম (Aminul Islam) সাংবাদিক ও কমিটির সভাপতি এ এইচ এম শহীদুল হক (A H M Shahidul Haque)-কে প্রকাশ্যে জেলে দেওয়ার হুমকি দেন। ঘটনায় প্রশাসন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ মে দুপুরে বাউফল আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (Baufal Adarsha Girls’ High School) প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার সময়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ইউএনও আমিনুল ইসলাম দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শহীদুল হককে উদ্দেশ করে বলেন, “আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর, মালিককে জেলে ভরে শাস্তিও দিতে পারি।”
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম (Jahanara Begum) বলেন, ইউএনও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। তাকে অবহিত করে অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তবে ইউএনও না জানার অভিযোগ এনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তার সঙ্গে শহীদুল হকের কথোপকথনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ইউএনওর বক্তব্য ও শহীদুল হকের পাল্টা দাবি
ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমি কারো ফোন ধরতে বাধ্য না। আমাকে চিঠি দিতে হবে।” উত্তরে শহীদুল হক বলেন, “আপনি প্রজাতন্ত্রের চাকর।” জবাবে ইউএনও বলেন, “আমরা এমন চাকর যে মালিককে জেলে ভরে দিতে পারি।”
শহীদুল হক দাবি করেন, তিনি তিন দিন ধরে ইউএনওকে আমন্ত্রণ জানানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ইউএনও কার্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন ও ফোন ধরেননি। এক পর্যায়ে ইউএনও বলেন, “আপনি আমার বাংলোতে যাননি, সেটিও একটি অফিস।” শহীদুল হক পাল্টা বলেন, “আপনার বাংলোতে ঢুকতে দেওয়া হয় না।”
ব্যক্তিগত স্বার্থের অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে অবহেলা?
ইউএনও শহীদুল হককে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগ আনেন। বলেন, “আপনি প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে ভাবছেন রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে গেছেন।” শহীদুল হক বলেন, “আপনি একজন কৃষকের ফোনও ধরতে বাধ্য।” তখন ইউএনও বলেন, “আমি মালিককে শাস্তিও দিতে পারি।”
জেলা প্রশাসকের অবস্থান
পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন (Abu Hasnat Mohammad Arefin) জানান, “আমার কাছে এখনো বিষয়টি নিয়ে কোনো তথ্য আসেনি। তথ্য পেলে মন্তব্য করবো।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফাঁস হওয়া বক্তব্য ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।