বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর (Bangladesh Jamaat-e-Islami) সাবেক আমির গোলাম আজম (Ghulam Azam)–এর পুত্র ও সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী (Abdullahil Amaan Azmi) তার একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান (Sheikh Mujibur Rahman) ২৩শে মার্চ ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ইয়াহিয়া খান (Yahya Khan) ও ভুট্টো (Bhutto)-র সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গেছেন।
স্বাধীনতার চাওয়া না থাকার দাবি
মঙ্গলবার (২০ মে) ‘প্রসঙ্গ: স্বাধীনতার রূপকার’ শীর্ষক একটি ফেসবুক পোস্টে আমান আযমী লেখেন, “২৫শে মার্চ শেখ সাহেব একাধিক বিদেশি টিভি চ্যানেলের কাছে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, তিনি স্বাধীনতা চান না।” তিনি আরও বলেন, “সবার জানা, শেখ সাহেব অখণ্ড পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন রাষ্ট্র গড়তে চাননি।”
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন
একজন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে আমান আযমী দাবি করেন, ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরুর আগেই তারা দেশের সব বেতার ও টেলিফোন ভবন নিয়ন্ত্রণে নেয়। ফলে শেখ সাহেবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রামে পাঠানো সম্ভব ছিল না।
তিনি লেখেন, “আরো হাস্যকর বিষয় হলো—শেখ সাহেব কিভাবে জানতেন, তৎকালীন মেজর জিয়া ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উর্দুভাষী অধিনায়ককে হত্যা করে বিদ্রোহ করেছেন?” তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘শেখ সাহেব তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন’ এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তাজউদ্দীন ও স্বাধীনতা যুদ্ধ
আমান আযমী দাবি করেন, “১০ই এপ্রিল ১৯৭১, তাজউদ্দীন আহমদ (Tajuddin Ahmad) ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi)-কে এককভাবে ৫ সদস্যের অস্থায়ী সরকার গঠনের কথা জানান, যদিও তখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গে তার দেখা হয়নি।”
তিনি আরও লেখেন, “৭ই মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করলেও, রাজনৈতিকভাবে স্বাধীনতা অর্জনে তাজউদ্দীনের নেতৃত্বই মুখ্য ছিল। অন্যান্য নেতাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না।”
শেখ মুজিব ‘স্থপতি’, রূপকার নয়
সবশেষে আমান আযমী উল্লেখ করেন, “আমার বাবা শেখ সাহেবকে স্বাধীনতার ‘স্থপতি’ বলেছেন। আমার মূল্যায়নেও এটাই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত।”
তার এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।