সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান (General Waqar-uz-Zaman)-কে ঘিরে সাম্প্রতিক গুজব সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম (Mohammad Shafiqul Alam) বলেছেন, “এটি পিওর গুজব।” তিনি দাবি করেন, এই ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেশের ভেতর অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চলছে।
ঠিকানা টিভির টকশোতে বক্তব্য
২০ মে, নিউইয়র্ক সময় সকাল ১১টা (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা), ঠিকানা টিভি (Thikana TV)-র খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় একটি টকশোতে অংশ নিয়ে এসব মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয় ঠিকানার ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে।
সেনাপ্রধান ও ড. ইউনূসের সম্পর্ক প্রসঙ্গে
প্রেস সচিব জানান, জেনারেল ওয়াকার ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)-এর মধ্যে “অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক” রয়েছে। তিনি বলেন, “মাসে এক-দুইবার জেনারেল ওয়াকার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, আবার স্যারও মাঝেমধ্যে এএফডি (AFD)-তে যান। নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে, দূরত্বের প্রশ্নই ওঠে না।”
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের নতুন ধারা নিয়ে উদ্বেগ
সম্পাদক পরিষদ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নতুন একটি ধারা সংযোজন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এতে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে এই ধারা আওয়ামী লীগ (Awami League)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণার আগের দিন অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।
প্রেস সচিব এ বিষয়ে বলেন, “জেএমবি বা হরকাতুল জিহাদের মতো সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ হওয়ার পর কেউ তাদের কার্যক্রম প্রচার করেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার আগে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে জঙ্গি বলা হয়, সেটাও অনেক গণমাধ্যম প্রচার করেছে।”
তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বিষয়ে
বিএনপি (BNP)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর বক্তব্য প্রচারে আগে নিষেধাজ্ঞা ছিল, যা এখন তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তার ভাষায়, “আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার বক্তব্য প্রচার আইনি কৌশলে বন্ধ রাখা হয়েছিল, আমরা ক্ষমতায় আসার পর তা তুলে নেই।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে লন্ডনে তারেক রহমানের একটি সাক্ষাৎকার আমি এএফপি (AFP)-র হয়ে নিয়েছিলাম, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ পেলেও দেশের কোনো গণমাধ্যম তা প্রচার করেনি।”
ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে বসানো নিয়ে মন্তব্য
ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)-কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation)-এর মেয়র হিসেবে বসানোর দাবি চলমান থাকলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রেস সচিব বলেন, “একজনের জন্য যা সম্ভব, অন্যজনের ক্ষেত্রে তা না-ও হতে পারে। ইশরাকের বিষয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। আইন উপদেষ্টা বিদেশে রয়েছেন, দেশে ফিরলেই সিদ্ধান্ত হবে।”
নির্বাচন নিয়ে আশ্বস্ত করলেন প্রেস সচিব
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা প্রসঙ্গে তিনি জানান, “নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে নিশ্চিত করে বলতে পারি, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এটা নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা নেই।”