জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizens’ Party – NCP) আজ (২১ মে) স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) (Election Commission) ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করেছে। এনসিপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে তাদের ওপর আর আস্থা রাখা যাচ্ছে না এবং কমিশনের পুনর্গঠন জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ ও দাবিপত্র
মঙ্গলবার রাত ৮টায় রাজধানীর বাংলামোটর (Banglamotor) এলাকায় রূপায়ণ টাওয়ারে এনসিপির কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলের নেতারা। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন (Akhtar Hossain)।
এতে দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম (Md. Nahid Islam) বলেন, “কমিশন রাজনৈতিক পক্ষপাত করছে। ৫ আগস্টের পর থেকেই সবকিছু জাতীয় নির্বাচনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জরুরি।”
ঢাকার প্রশাসক, বিএনপি ও ইশরাক প্রসঙ্গ
ঢাকা উত্তরের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ (Mohammad Ejaz) প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু রাজনৈতিক দল টেন্ডার না পেয়ে অভিযোগ তুলছে। সরকারের উচিত তদন্ত করে দেখা।”
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী (Nasiruddin Patwari) বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, স্থানীয় নির্বাচন হলে সংকট নিরসন হবে এবং কমিশনের প্রতি আস্থা বাড়বে।”
ইশরাক হোসেন বনাম তাপস মামলা এবং কমিশনের ভূমিকা
লিখিত বক্তব্যে আখতার হোসেন বলেন, “ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain) বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh) মামলায় কমিশনের নির্লিপ্ত আচরণই প্রমাণ করে তাদের পক্ষপাতিত্ব।” তিনি বলেন, “কমিশন মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, পরে রাতের আঁধারে গেজেট প্রকাশ করেছে, যা প্রশ্নবিদ্ধ।”
কমিশনের গঠন ও আইনি ভিত্তি নিয়ে আপত্তি
আখতার হোসেন আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে অবৈধভাবে প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ (Chief Election Commissioner Appointment Act 2022) অনুসারে, যা তৎকালীন আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের মাধ্যমে পাশ হয়েছিল এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
কমিশন সংস্কার প্রস্তাব নাকচ করার অভিযোগ
তিনি বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য দেওয়া প্রস্তাবনায় নির্বাচন কমিশনকে আগে গঠন করে তা অকার্যকর করা হয়েছে। এমনকি পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবও বর্তমান কমিশন নাকচ করেছে।”
এনসিপি মনে করে, এই নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখা যায় না এবং দেশজুড়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য নতুন কমিশন গঠন জরুরি।