জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (National University) এর উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ (ASM Amanullah) শিক্ষার্থীদের ওপর স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— হামলা, চাপ বা আন্দোলন যাই হোক না কেন, কোনো অবস্থাতেই ‘অটোপাস’ দেওয়া হবে না।
ক্যাম্পাসে হামলার শিকার উপাচার্য
বুধবার দুপুরে গাজীপুরের (Gazipur) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক ভবনের ফটকে উপাচার্যের ওপর হামলা চালানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান (Md. Mostafizur Rahman) জানান, স্নাতক (পাস)-২০২২ ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষায় পাস না করেও অটোপাসের দাবিতে উপাচার্যকে ঘিরে ধরেন এবং হামলা করেন। এতে উপাচার্য পায়ে আঘাত পান।
উপাচার্যের কড়া অবস্থান
রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে অধ্যাপক আমানুল্লাহ লিখেন, “তোমরা হামলা করেছ, আমাকে আহত করেছ, আরো যা ইচ্ছা করতে পার, কর। অটোপাস আমরা দেব না।” তিনি আরও বলেন, “চোখের সামনে একটা জাতির শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস হতে আমরা দেব না।”
তিনি জানান, দেশের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণকারী একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনোভাবেই ‘অটোপাস’ নীতির গ্রহণযোগ্যতা নেই।
সিসিটিভি ফুটেজ ও গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ
উপাচার্য তার পোস্টে হামলার সিসিটিভি ফুটেজ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের লিংক শেয়ার করেন। সামাজিক মাধ্যমে বহু ব্যবহারকারী তার এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছেন।
আন্দোলনের পেছনে উসকানি ও অতীত প্রেক্ষাপট
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, স্নাতক (পাস) কোর্সের শিক্ষার্থীরা কয়েক মাস ধরেই পরীক্ষা ছাড়া পাসের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এর আগেও ক্যাম্পাসের ফটকে তারা বিক্ষোভ করেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবরই এই দাবিকে অগ্রাহ্য করে আসছিল।
মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “করোনা মহামারী ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বিবেচনায় নিয়ে এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ‘গ্রেস মার্ক’ ও পুনঃমূল্যায়নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে নতুন করে অটোপাসের দাবি ভিত্তিহীন।”
তিনি বলেন, “কিছু ব্যর্থ শিক্ষার্থী অন্যদের উসকানিতে বুধবার হঠাৎ করে এই ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে।”
৩৪ লাখ শিক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠান, অটোপাস নয়
১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে ২ হাজার ২৫৭টি কলেজ ও ইনস্টিটিউটে ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ৮৩২ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্নাতক (পাস) পরীক্ষায় ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাফ কথা— ‘অটোপাস’ কোনো শিক্ষাব্যবস্থার উপযুক্ত পথ নয় এবং ভবিষ্যতেও তা কোনো অবস্থাতেই বিবেচনায় নেওয়া হবে না।