গত বছরের ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) দেশত্যাগ করে ভারত চলে যান। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা, মন্ত্রীরা, বিচারপতি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা প্রাণনাশের আশঙ্কায় আশ্রয় নেন সেনানিবাসে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ৬২৬ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২৪ জন ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
কারা কোথায় অবস্থান করছেন?
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী (Shirin Sharmin Chaudhury) এখনো দেশে রয়েছেন এবং ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট (Dhaka Cantonment) এই অবস্থান করছেন। সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু (Shamsul Haque Tuku) অবস্থান করছেন লন্ডনে।
বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন:
– সাবেক মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক (Zunaid Ahmed Palak)
– শাজাহান খান (Shajahan Khan)
– সাবেক এমপি সায়েদুল হক সুমন (Sayedul Haque Suman)
– রাগিবুল আহসান রিপু (Ragibul Ahsan Ripu), বগুড়া-৬
– সুজন সাত্তার (Sujon Sattar)
– এমএ লতিফ (MA Latif)
ভারতে পালিয়ে গেছেন:
– টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি ছোট মনির (Chhoto Monir)
– ময়মনসিংহ সিটির সাবেক মেয়র ইকরামুল হক টিটু (Ikramul Haque Titu)
– হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি আবু জাহির (Abu Zahir)
– বগুড়া-৪ আসনের সাবেক এমপি একেএম রেজাউল করিম তানসেন (AKM Rezaul Karim Tansen)
– সাবেক এমপি নাজমা আকতার (Nazma Akter)
– জামালপুরের মাদারগঞ্জের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম (Mahbub Alam)
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারীরা
- সাবেক এমপি ও ছাত্রলীগ নেতা ইকবালুর রহিম (Iqbalur Rahim) এবং
- যশোরের সাবেক এমপি কাজী নাবিল আহমেদ (Kazi Nabil Ahmed) রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
- সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (Anwaruzzaman Chowdhury) অবস্থান করছেন লন্ডনে।
অজ্ঞাত বা আত্মগোপনে থাকা ব্যক্তিরা
- কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফ কামাল (Sharif Kamal) রয়েছেন দেশে
- কাউন্সিলর এসএম রফিউদ্দিন আহমেদ (SM Rafiuddin Ahmed), এসএম ফয়সাল আহমেদ রানা (SM Faisal Ahmed Rana) এবং
- বরিশাল সিটির সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব (Ziaur Rahman Biplob) — এদের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি।
- খুলনা (Khulna) সিটির সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক (Talukder Abdul Khaleque) এবং বাগেরহাট-৪ (Bagerhat-4) এর সাবেক এমপি হাবিবুন নাহার (Habibun Nahar) আত্মগোপনে আছেন বলে সূত্র জানায়।
সেনাবাহিনীর ব্যাখ্যা
আইএসপিআর (ISPR) জানায়, এই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল শুধুমাত্র মানবিক কারণে। হত্যার ঝুঁকিতে থাকা এসব মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই ছিল সেনাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য। পরে অধিকাংশই এক-দুদিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট এক বিবৃতিতে আইএসপিআর সেনানিবাসে আশ্রয়গ্রহণকারী ১৯৩ জনের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Home Ministry) বরাবর প্রেরণ করে, যা একটি মীমাংসিত ইস্যু ছিল বলে জানানো হয়।