বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের গুম নিয়ে যা বললেন প্রেস সচিব

বিএনপি (BNP)’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) সম্পর্কে ২০১৫ সালের তথাকথিত গুম ও ভারতের শিলংয়ে উপস্থিতির ঘটনা ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

গুমের অভিযোগ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরা (Uttara) এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাকে তুলে নেওয়া হয় বলে দাবি করেন সালাহউদ্দিন। তিনি জানান, ৬১ দিন তিনি নিখোঁজ ছিলেন এবং পরে তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে পাঠানো হয়। এই ঘটনা তিনি ‘গুম’ হিসেবে অভিহিত করেন।

ওই সময় দেশে চলছিল শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের কঠোর দমনপীড়ন। খালেদা জিয়া (Khaleda Zia) গৃহবন্দি ছিলেন গুলশানের কার্যালয়ে, আর বিএনপির অধিকাংশ শীর্ষ নেতারা কারাগারে বা আত্মগোপনে ছিলেন।

প্রেস সচিবের বক্তব্য

এই প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে ২৫ মে একটি পোস্ট দেন। তিনি জানান, গুম হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগেই সালাহউদ্দিন আহমেদ গোপনে বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন এবং প্রতিদিন সাহসিকতাপূর্ণ ও সরকারবিরোধী বিবৃতি দিতেন। এতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষিপ্ত হন এবং তার বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের নির্দেশ দেন বলে দাবি করেন শফিকুল।

শফিকুল আরও জানান, তিনি ও দক্ষিণ এশিয়ার সাংবাদিক ক্রিস অটন এএফপি (AFP)’র হয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন (Robert Gibson) এর সঙ্গে গোপনে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে যান। সে সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রতিদিন প্রতিবাদ বিবৃতি পাঠাতেন যা ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাকর।

শিলংয়ে প্রেরণ ও পরিবারের ভূমিকা

সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ সাহসিকতার সঙ্গে নিখোঁজ স্বামীর মুক্তির দাবি তুলে ধরেন। তার নির্ভীক আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিষয়টি আলোচিত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সালাহউদ্দিনকে ভারতের শিলং (Shillong) শহরে পাঠানো সম্ভব হয়।

তরুণদের স্মৃতিভ্রষ্টতা নিয়ে দুঃখ

শফিকুল আলম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আজকের অনেক তরুণ বিএনপি কর্মী সেই কঠিন সময়ের ইতিহাস ভুলে গেছে এবং উল্টো এখন সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হচ্ছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।