ভারতের হিন্দুত্ববাদী চ্যানেল আজতক বাংলা (Aajtak Bangla)-তে সাক্ষাৎকার দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপি (BNP) নেত্রী রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana)। তার বক্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠেছে ব্যাপক সমালোচনার ঝড়। ইন্দ্রজিৎ কুণ্ডুর নেওয়া এ সাক্ষাৎকারে শিরোনাম ছিল—‘ইউনূস কেন নির্বাচন চাইছেন না? ফাঁস করল বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা’।
সাক্ষাৎকারটি ইউটিউবে আপলোড হওয়ার পর মাত্র ২০ ঘণ্টায় ৭৪ হাজার ভিউ হয় এবং ১ হাজার ১৪০টির বেশি মন্তব্য আসে, যার বেশিরভাগই নেতিবাচক। অনেকে রুমিন ফারহানার ভারতীয় চ্যানেলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলাকে “দেশবিরোধী” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২১ মে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (Bangladesh Army) তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজতক বাংলার একটি রিপোর্টকে “ভুয়া ও উদ্দেশ্যমূলক” আখ্যা দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “প্রাণ বাঁচাতে ভারতের কাছে আশ্রয় চাইছেন ওয়াকার”—যা সেনাবাহিনীর মতে গুজব।
এই চ্যানেল নিয়মিতভাবেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে গুজব ছড়ায়। প্রোপাগান্ডামূলক শিরোনামে রয়েছে: “ইউনূস পালিয়ে যাচ্ছেন?”, “ওয়াকার-উজ-জামান কে?”, “ইউনূসের পদত্যাগ নাটক”, “তারেক রহমানের লন্ডন ষড়যন্ত্র”, “বাংলাদেশে সেনা বিদ্রোহ?”
সামাজিক মাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এভাবে ভারতীয় মিডিয়ায় গিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন রুমিন। আহমেদ হুসেইন মন্তব্য করেছেন, “শেষ মুহূর্তে ভারতের চ্যানেলে? ছি রুমিন ফারহানা, ছি!” এ আই ফাহাদ লিখেছেন, “দেশদ্রোহিতার সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন।”
সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট শরিফ সাইদুর বলেন, “আজতক বাংলায় যে ধরনের সাক্ষাৎকার রুমিন দিয়েছেন, তা শুনে মনে হয়েছে নিঝুম মজুমদার (Nijhum Majumdar) কথা বলছেন। ইউনূসের বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলেছেন, তা হৃদয়বিদারক।”
এদিকে তুলনায়, সাংবাদিক মাহফুজ আনাম (Mahfuz Anam) ভারতীয় মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিলেও বাংলাদেশকে ডিফেন্ড করেছেন, যা ছিল অপ্রত্যাশিত হলেও প্রশংসনীয়।
সমালোচকরা বলছেন, ইউনূসের সমালোচনা বাংলাদেশের ভেতরেই হোক—ভারতের হিন্দুত্ববাদী মিডিয়ার সামনে নয়। তারা রুমিনের এ আচরণকে “নির্লজ্জতার মাইলফলক” বলেও অভিহিত করেছেন।