ফাহাম আবদুস সালাম (Faham Abdus Salam) দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হলেও, এ ধরনের ‘দলীয়’ অপরাধের দায় নির্ধারণে বাংলাদেশের আইনি কাঠামো স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, “দলীয় অপরাধ” কী, সেটি আইনি ভাষায় এখনো সংজ্ঞায়িত হয়নি এবং এই ফাঁকফোকরের সুযোগেই অনেক সংগঠিত সহিংসতা ব্যাখ্যাতীত থেকে যাচ্ছে।
দলীয় অপরাধ বনাম ব্যক্তিগত দায়
ফাহাম বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী যদি সংগঠিত সহিংসতায় অংশ নেয়, তাহলে ব্যক্তিগত বিচারের পাশাপাশি সেই সহিংসতার পেছনের ‘কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ও খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হতেন, তাহলে কি পুলিশ ও ছাত্রলীগ (Chhatra League) একসঙ্গে সহিংসতায় জড়িত হতো?”
তিনি আরও বলেন, কোনো উচ্চপদস্থ নেতা যেমন ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader) যদি দলীয় কর্মীদের প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন, সেটিকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে—ব্যক্তিগত মত হিসেবে, না দলের সিদ্ধান্ত হিসেবে?
দলীয় সক্ষমতা ও দায়বদ্ধতা
ফাহামের মতে, রাজনৈতিক নেতাদের আদেশ শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সেটি দলের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে বাস্তবায়িত হয়। এ কারণেই “দলীয় সক্ষমতা” একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা অনেক ক্ষেত্রে সহিংসতা সংগঠনের সহায়ক হয়। অথচ দলীয় অপরাধে দলকে দায়ী করা হবে কি না—তা নির্ধারণে এখনো কোনো স্পষ্ট নিয়ম নেই।
বিচারব্যবস্থার ভূমিকা চাইলেন
প্রধান বিচারপতি (Chief Justice)-এর উদ্দেশে ফাহাম বলেন, “আমরা চাই একটি ল্যান্ডমার্ক রায় বা পর্যবেক্ষণ, যা ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশক হবে। আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া দলীয় অপরাধের কাঠামো নির্মাণ অসম্ভব।”
তিনি যুক্ত করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ যদি “দলীয়”ভাবে সংগঠিত হয়, তাহলে সেই অপরাধের দায়ও দলীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু সে দায় কবে, কী পরিমাণ অপরাধে, কীভাবে ন্যস্ত হবে—এই প্রশ্নগুলো এখনো উত্তরবিহীন।
নিরীহদের ওপর প্রভাব এবং ন্যায়বিচার
ফাহাম সতর্ক করেন, যদি দলকে শাস্তি দেওয়া হয়, তা কিছু নিরপরাধ কর্মীর ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আদালতের উচিত হবে—“দলীয় অপরাধ”-এর জন্য একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ থ্রেশহোল্ড নির্ধারণ করা।
তিনি বলেন, বিএনপি (BNP), জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami) বা জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens Party)-র স্থানীয় নেতারা যদি সংঘবদ্ধ অপরাধে যুক্ত হন, তবুও সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দলীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে না—যদি না হাই-কমান্ডের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হয়।
