শেখ হাসিনার বিচার ও দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে আলজাজিরার আলোচনায় বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরা (Al Jazeera)’র ইনসাইড স্টোরি অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)কে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার করার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন বিশ্লেষকরা।

মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ

আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তিনি গত বছরের বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষোভকারীদের উপর দমন অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হাসিনাসহ মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ইনসাইড স্টোরিতে অতিথিদের মতামত

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মোহাম্মদ জামজুম। অতিথি ছিলেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক আব্বাস ফাইজ (Abbas Faiz), ও.পি. জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় (O.P. Jindal Global University)-এর অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত (Sreeradha Dutta) এবং বিএনপি (BNP) নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana)।

আব্বাস ফাইজ বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের দমন অভিযানে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাই আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে বিচারের দাবি জানান তিনি।

ভারতের ভূমিকা ও প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গ

শ্রীরাধা দত্ত বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না-ও দিতে পারে। ভারতের মতে, বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থা পক্ষপাতদুষ্ট এবং নিরপেক্ষ নয়।

রুমিন ফারহানা বলেন, বিচার এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং সাধারণত এসব মামলার নিষ্পত্তিতে বহু বছর সময় লাগে। বড় প্রশ্ন হলো—হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের আদৌ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা, কারণ তারা এখন ভারতে অবস্থান করছেন।

রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব

বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক ইস্যু নয়, এটি এখন একটি আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।