বাংলাদেশ (Bangladesh) এবার চীন (China)কে সরাসরি আম রপ্তানি করে কৃষিপণ্য বাণিজ্যে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরাসরি চাংশা (Changsha) শহরে পৌঁছায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ (Chapainawabganj) থেকে আসা তিন টন তাজা ও নিরাপদ আম। এক মিনিটেই তা পার হয়ে যায় হুনান প্রদেশের (Hunan Province) হুয়াংহুয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Huanghua International Airport) কাস্টমস চেক। চীনা কর্মকর্তারা এককথায় জানান, “নো ইস্যু, পারফেক্ট কোয়ালিটি”।
আম উপহার থেকে রপ্তানি—কূটনৈতিক রূপান্তর
এক সময় এই আমই ভারতের দিল্লিতে উপহারের ঝাঁপি হয়ে যেত। আজ তা রপ্তানি হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সফলতা কেবল কৃষিখাত নয়, বাংলাদেশ-চীন ও ভারত সম্পর্কের কূটনৈতিক বলয়েও তাৎপর্যপূর্ণ। কেউ কেউ এটিকে বলছেন “ড. ইউনূসের (Dr. Muhammad Yunus) আম কূটনীতি”—যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতনির্ভরতা থেকে সরে এসে চীনের বিশাল বাজারে প্রবেশ করছে।
ব্যাগিং প্রযুক্তি ও কেমিক্যালমুক্ত উৎপাদন
২০২৪ সালে চীনের আমদানি অনুমোদনের পরই বাংলাদেশ দ্রুত প্রস্তুতি নেয়। ফ্রেশ এক্সপ্রেস ইউনিট ও দ্রুত ক্লিয়ারেন্স ব্যবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত কেমিক্যালবিহীন আম পৌঁছে যায় চীনের বাজারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (Department of Agricultural Extension) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২.৭ মিলিয়ন টন, যার মধ্যে ৫ হাজার টন রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে।
চীনের বাজারে বাংলাদেশের সম্ভাবনা
২০২৪ সালে চীনের ফল আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯.৪৫ বিলিয়ন ডলার। তার ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। বিশাল এই বাজারে বাংলাদেশের আম ইতিমধ্যেই ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। এর ফলে ভবিষ্যতে কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।