‘কালো মানিক’ নামের একটি বিশাল ষাঁড় গরু উপহার দিতে ঢাকায় এসেছিলেন পটুয়াখালীর কৃষক সোহাগ মৃধা। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া (Khaleda Zia) উপহারটি গ্রহণ না করে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাকে নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপনের পরামর্শ দেন। এসময় তার পরিবারের জন্য পাঠানো হয় বিশেষ ঈদ উপহারও।
রাজধানীতে ‘কালো মানিক’ নিয়ে উপস্থিত সোহাগ
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধা বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল ৮টায় ‘কালো মানিক’ নামের ষাঁড়টি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ষাঁড়টির ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। কুচকুচে কালো রঙের এই গরুটিকে স্থানীয়রা আদর করে ডাকেন ‘কালো মানিক’ নামে। গরুটির জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠলেও তা বিক্রি না করে তিনি বিএনপি নেত্রীকে উপহার দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
উপহার গ্রহণ না করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বেগম খালেদা জিয়া উপহারটি গ্রহণ না করে সোহাগ মৃধাকে কৃতজ্ঞতা জানান এবং তাকে অনুরোধ করেন যেন নিজ এলাকায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন। পরে তার পরিবারের জন্য পাঠানো হয় বিশেষ ঈদ উপহার।
তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া—উভয়েই এই নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলে জানান ডা. জাহিদ।
পরিবার ও পেছনের গল্প
সোহাগ মৃধার পরিবার জানায়, ২০১৮ সালের শেষ দিকে স্থানীয় চৈতা বাজার থেকে মাত্র এক লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি ফ্রিজিয়ান গাভি কেনা হয়। গাভিটি এক সপ্তাহের মাথায় একটি বাছুর দেয়, যেটি পরে বিশাল আকারের ষাঁড়ে রূপ নেয়। গাভিটি পরে বিক্রি করা হলেও বাছুরটি সোহাগের পরিবার ছয় বছর ধরে দেশীয় খাবার ও যত্নে লালন-পালন করে বড় করে তোলে।
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, “ওর মন চাইছে, তাই ও উপহার দিতে চায়। আমরা খুশি। ওর বাবা নেই, সামান্য জমি চাষ করেই সংসার চালায়। ছোটবেলা থেকেই ও বিএনপিকে ভালোবাসে।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও উৎসাহ
সোহাগ মৃধা বলেন, “২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এক কৃষক শেখ হাসিনাকে গরু উপহার দেন। সেই ঘটনা দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, সুযোগ পেলে প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমি গরু উপহার দেব।”
বিএনপি আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “সোহাগ মৃধা একজন নিবেদিতপ্রাণ বিএনপি কর্মী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিবারসহ ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি লালন-পালন করেছেন।”