রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশে চিকিৎসার বিরোধিতা করলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

রাজনীতিবিদ ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা (Republic Officials) যেন আর বিদেশে চিকিৎসা নিতে না পারেন, এমন দাবি জানিয়েছেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ (Barrister Fuad)। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিপক্ষে। শুধু বিদেশে নয়, এমনকি বেসরকারি হাসপাতালেও তাদের চিকিৎসা নেওয়ার বিরোধী আমি।”

সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের চিকিৎসা প্রসঙ্গে মন্তব্য

মো. আব্দুল হামিদ (Md. Abdul Hamid)-এর বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “উনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে বলে আমার জানা নেই। বরং আওয়ামী রেজিমের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা উচিত। একটা অবৈধ সংসদ কি বৈধ প্রেসিডেন্ট সৃষ্টি করতে পারে—এটাই বড় রাজনৈতিক প্রশ্ন।”

তিনি আরও বলেন, “যেহেতু তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই এবং সংবিধানে নাগরিক হিসেবে তার চলাফেরার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেহেতু তার দেশত্যাগে বাধা দেওয়া অনুচিত।”

নৈতিক অবস্থানের পক্ষে ব্যারিস্টার ফুয়াদ

ফুয়াদ বলেন, “আমি ইন প্রিন্সিপাল বিপক্ষে থাকি, সেটা খালেদা জিয়া (Khaleda Zia) হোন কিংবা আব্দুল হামিদ হোন, যত বড় নেতা বা সরকারি কর্মকর্তা হোন না কেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের উচিত সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নেওয়া। যদি তারা সরকারি সেবা না নেন, তাহলে জনগণের আস্থাও কখনো গড়ে উঠবে না।”

তিনি বলেন, “মানুষ তখন ভাববে ভালোভাবে মরতে হলে বিদেশি হাসপাতালে যেতে হবে। সদর হাসপাতালে মরলে মান-ইজ্জত থাকবে না! এর ফলে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর আস্থা কমে যাবে।”

রাজনৈতিক ও নৈতিক সংস্কারের আহ্বান

ফুয়াদ বলেন, “আপনি যখন জানবেন এমপি, মন্ত্রীরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন, তখন হাসপাতালের কর্মকর্তারাও দায়িত্বশীল হবেন, ভালো সার্ভিস দেবেন। এটা আইন করে বন্ধ করা যাবে না, এটা একটা নৈতিকতার প্রশ্ন। পলিটিকে এই অবস্থান নিতে হবে।”

তিনি দেশের মিডিয়াকেও দায়ী করে বলেন, “অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় হাইপ তৈরি হয়, যার ফলে মিডিয়ার মূল্যবান সময় অপচয় হয়। এর মাধ্যমে কারো উপকার হয় না।”

মামলা বা এমবারগোর প্রসঙ্গ

তিনি বলেন, “যদি সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধ থাকে, তাহলে তদন্ত হোক। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো এমবারগো বা মামলা ছিল না বলে প্রতীয়মান হয় না। তাহলে যদি কোনো ব্যক্তি অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত হন, তবে রাষ্ট্রকে ক্ষমা চেয়ে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”

ব্যারিস্টার ফুয়াদের এই বক্তব্য আবারও আলোচনায় এনেছে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণের নৈতিকতা এবং দেশের সেবাব্যবস্থার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার প্রশ্ন।