আইন মন্ত্রণালয় (Law Ministry) তিনটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে আইনি সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)। শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে (Bailey Road) অবস্থিত জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা (National Legal Aid Services Organization) কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনটি প্রধান লক্ষ্য
সভায় সভাপতির বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেন, আইন মন্ত্রণালয় বর্তমানে তিনটি মূল লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে—
১. দ্রুত, স্বল্পসময়ে এবং কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি
২. ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ
৩. জনগণকে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া
তিনি জানান, দেওয়ানি কার্যবিধির পরিবর্তন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ফৌজদারি কার্যবিধি (Criminal Procedure Code) সংশোধনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এটি এক মাসের মধ্যে অধ্যাদেশ আকারে পাস করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
ডিজিটালাইজেশন ও প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিচার বিভাগকে ডিজিটালাইজ করার পরিকল্পনা এবং বিচারকদের প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আসিফ নজরুল। বিচারকদের সম্পদ বিবরণী সংগ্রহের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মামলার বোঝা কমাতে আইনগত সহায়তার সম্প্রসারণ
আইন উপদেষ্টা জানান, দেশে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লাখ মামলা হয়, কিন্তু সরকারি আইনি সহায়তার মাধ্যমে মাত্র ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়। তিনি বলেন, আইনগত সহায়তা সংস্থাকে আরও দক্ষ ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারলে এক থেকে দুই লাখ মামলা মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। এতে আদালতের ওপর চাপ কমবে এবং জনগণ দ্রুত ন্যায়বিচার পাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যস্থতায় আসা বাধ্যতামূলক হলেও রায় মানা বাধ্যতামূলক নয়।’ এতে করে কারও অধিকার হরণ হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় দেশের বিভিন্ন জেলার আইনজীবী সমিতির নেতা, বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধি, আইন মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা-র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার ওপর মতামত ও পরামর্শ দেন।