খুলনা (Khulna) জেলার পাইকগাছা (Paikgacha) উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party – NCP)’র নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে আওয়ামী লীগ (Awami League) সংশ্লিষ্ট একাধিক বিতর্কিত ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদায়ন
বুধবার এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাইকগাছা উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে সাবেক এমপি রশিদুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ মো. হাফিজ বিন আমীনকে এবং যুগ্ম সমন্বয়কারী করা হয়েছে উপজেলা তরুণ লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত ও আলোচিত মো. মিনারুল ইসলাম সানাকে, যিনি ‘টোল মিনার’ নামেও পরিচিত।
কমিটির মেয়াদ আগামী তিন মাস বা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন: মো. খলিলুর রহমান বাবু, শেখ নূরজয় মিস্ত্রী, মিসবাহ আহমদ (যুগ্ম সমন্বয়কারী); সদস্য হিসেবে রয়েছেন মো. আলমগীর হোসেন, মো. হাবিবুর রহমান, এলিট হোসেন, ইসমাইল সরদার, আসিফ সরদার ও জিএম আব্দুল্লাহ আল মাসুম।
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ পদে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে ‘টোল মিনার’ নামে পরিচিত মিনারুল ইসলাম সানাকে নিয়ে বিতর্ক আরও গভীর হয়েছে।
সম্প্রতি থানায় পুলিশ তাকে নিয়ে যাওয়ার পর আবার ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাও আলোচনার কেন্দ্রে আসে। তার আটকের পর স্থানীয় ছাত্র সংগঠকের সঙ্গে তদন্ত ওসি মো. ইদ্রিসুর রহমান (Md. Idrisur Rahman)–এর ফোনালাপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিতর্ক তীব্র হয়। এরপরই এনসিপির কমিটিতে তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
পাইকগাছা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক সাংবাদিক জি এম মিজানুর রহমান বলেন, “এই কমিটিকে কেউ কেউ আওয়ামী পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।”
পাইকগাছা পৌর জামায়াত (Paikgacha Municipal Jamaat) এর নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আওয়ামী নেতাদের এনসিপিতে স্থান দেওয়া সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
পাইকগাছা পৌর বিএনপি (Paikgacha Municipal BNP)’র আহ্বায়ক আসলাম পারভেজ বলেন, “১৫/১৬ বছর ধরে আমরা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার। সেই নির্যাতনকারীদের পদ দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে, যা শহিদদের অপমান।”
টোল মিনারের বক্তব্য
আওয়ামী লীগের সঙ্গে পূর্বে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে মিনারুল ইসলাম সানা বলেন, “জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের উপর অত্যাচার চলেছে, আমি তখন তাদের পাশে ছিলাম, খাবার ও সহায়তা দিয়েছি। এরপর থেকেই আমি ছাত্রদের সঙ্গে যুক্ত। তাই এনসিপি আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, এনসিপি পাইকগাছায় কোনো দখলবাজি বা চাঁদাবাজি মেনে নেবে না এবং উপজেলাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
