এমপি হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় এলাকায় উন্মত্ত অবস্থায় অনেকে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ

রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ, সংরক্ষিত আসনের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে উন্মুক্ত মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ (Barrister Fuad)। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের আরপিওতে রাজনৈতিক দলে নারীদের ৩৩ শতাংশ অন্তর্ভুক্তির অঙ্গীকার করা হলেও, আজও ১০ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব হয়নি।

সংরক্ষিত আসন ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে উদ্বেগ

ব্যারিস্টার ফুয়াদ প্রশ্ন তোলেন, সংরক্ষিত নারী আসনের বাস্তব প্রভাব কোথায়? ইলেকশন কমিশন কি এ ব্যর্থতার পর্যালোচনা করেছে? না করলে দায় নির্ধারণ কোথায় হবে? তিনি বলেন, “ভোটই তো হচ্ছে না, তাহলে আপনি কাকে শাস্তি দেবেন?”

তিনি বলেন, উপজেলা, জেলা পরিষদে নারী প্রতিনিধি থাকলেও তাদের প্রকৃত ক্ষমতা নেই। তিনি মন্তব্য করেন, “পাইপলাইন তৈরি না করে কোটার মাধ্যমে চাপিয়ে দিলে এমপি হবে শুধু মমতাজ (Mumtaz) বা সুবর্ণা মোস্তফা (Suborna Mostafa) মার্কার নারী।”

এমপি হওয়ার প্রতিযোগিতা ও নারী প্রার্থীর নিরাপত্তা

তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “এমপি হওয়ার জন্য অনেক পুরুষ নেতা এলাকায় পাগলা কুকুরের মতো বসে আছে। ওরা ১৭ বছর ধরে এমপি হতে পারেনি। এখন নারী প্রার্থী এলেই তাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করবে।”

ফুয়াদ বলেন, তিনি নিজ চোখে দেখেছেন—একই দলের ভেতরেই নারী প্রার্থীর ওপর হামলার পরিকল্পনা হয়।

রাজনৈতিক সংস্কারের প্রস্তাব

রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, “দলের ভেতর থেকেই জবাবদিহিতা আনতে হবে। ডেডলাইন, পদ্ধতি ও ফ্রেমওয়ার্ক নির্ধারণ করতে হবে।”

সংসদের দক্ষতা ও জনদৃষ্টিভঙ্গি

বাংলাদেশের সংসদ (Bangladesh Parliament) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫০ জন এমপি তৈরি হয়নি এখনো, যারা জানেন আইন প্রণয়ন কী।” তিনি বলেন, “জনগণ এখনো সংসদ মানে ইউপি চেয়ারম্যানের বড় সংস্করণ—চাল দেয়, রাস্তা করে। কেউ বলে না, ‘আমার এমপি বাজেট বিতর্ক করুক।’”

তিনি বলেন, আইন প্রণেতা হিসেবে এমপি চিত্র তুলে ধরতে হলে জনগণকেও সেইভাবে প্রস্তুত করতে হবে। “কিন্তু বাস্তবতা হলো, জনগণ এখনো চায় চাল, টিন, রাস্তা, উপবৃত্তি, ভাতা।”

প্রস্তাব: সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০

সমাধান হিসেবে ফুয়াদ বলেন, সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করতে হবে। সেই আসনগুলোতে নারী ছাড়াও প্রতিবন্ধী, পাহাড়ি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও হরিজনদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান—কমপক্ষে ৫-১০ শতাংশ নারীকে সরাসরি নমিনেশন দেওয়ার। তবে বাস্তবতা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কারণ দীর্ঘদিন ধরে এমপি না হতে পারা নেতারা এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে রেখেছে, যারা নতুন নারী প্রার্থীকে প্রতিরোধ করবে।